নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র কিছু বিষয় ভারতের সংবিধান বিরোধী। দেশের বিরোধী দলগুলি কিংবা কোনও সমাজসেবামূলক মানবাধিকার সংস্থার দাবি নয়। এই দাবি করা হয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের একটি নিরপেক্ষ গবেষণাদলের রিপোর্টে।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনকে সংশোধিত করে সিএএ তৈরি করা হয়। সংসদে পাশ হওয়ার পর চার বছর পড়ে থাকলেও গত মার্চে তা চালু হয়েছে। এই সংশোধিত আইনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হয়ে ভারতে আসা নাগরিকত্বের প্রমাণহীন অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রদানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁদেরই কোনও নথি ছাড়াই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
মার্কিন কংগ্রেসের নিরপেক্ষ গবেষণা রিপোর্টের দাবি, সিএএ-র মূল বিষয় হচ্ছে, তিনটি দেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা ৬টি ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব প্রদানের দরজা খুলে দেওয়া। যার মধ্যে মুসলিমদের রাখা হয়নি। আর এতেই ভারতীয় সংবিধানের নির্দিষ্ট কিছু ধারা ভঙ্গ করা হয়েছে।
এই রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি-র সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সিএএ ভারতীয় মুসলিম জনসংখ্যার অধিকার বিপন্ন করতে পারে। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যারা সিএএ-র বিরোধিতা করছে তারা শাসকদল বিজেপির উদ্দেশ্যের প্রতি সন্দিহান।
ভারতে সিএএ বিরোধীদের ধারণা অনুযায়ীই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিজেপি হিন্দু সংখ্যাগুরুদের আধিপাত্য চাপিয়ে দিতে চাইছে। তাদের মুসলিম বিরোধী কর্মসূচি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার কাঠামোকে আঘাত করবে। যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিধি ও আইনকে ভঙ্গ করবে।
মার্কিন রিপোর্টে সিএএ-কে বিজেপির রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক ও নির্বাচনী চমক বলেও বর্ণনা করা হয়েছে। সমালোচনার কথা উল্লেখ করে রিপোর্টের মন্তব্য, সিএএ শুধুমাত্র অনুমোদিত কিছু ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। যা মোদী-বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবমূর্তিকে খর্ব করে হিন্দু সংখ্যাগুরুদের শ্রেষ্ঠত্বকে বয়ে বেড়াবে। অহিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দেওয়া হবে।