আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ‘ভগবান এবং উপাসনার স্থান’-এর নামে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। এই আবহে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মোদীর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলার আবেদন দায়ের হল। আনন্দ এস জোনধালে নামে একজন আইনজীবী আবেদনটি দায়ের করেছেন।
গত ৯ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের পিলভিটে ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচনী জনসভায় মোদীর বক্তৃতার উল্লেখ করে এই আবেদন করেছেন আনন্দ। আনন্দ বলেছেন যে তাঁর বক্তৃতার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী ভোটারদের কাছে ‘হিন্দু ও শিখ দেবতা এবং হিন্দু উপাসনালয়ের’ নামে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।
মামলাকারী আইনজীবী আনন্দ বলেন, ‘মোদী নিজের ভাষণে সেদিন বলেছিলেন তিনি রামমন্দির তৈরি করে দিয়েছেন এবং কর্তারপুর সাহিব করিডোর তৈরি করে দিয়েছেন। গুরুজদ্বারে লঙ্গারের রন্নার জন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ওপর থেকে জিএসটি তুলে দিয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি আফগানিস্তান থেকে গুরু গ্রন্থ সাহিব নিয়ে এসেছেন।’ এই আবহে আনন্দের অভিযোগ, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন মোদী।
মামলাকারীর দাবি, কম্পেন্ডিয়াম অফ ইনস্ট্রাকশনস ভলিউম ৩-এর সাধারণ বিধির অধীনে ১(১) এবং ৩ নং বিধি লঙ্ঘন করেছেন মোদী। কী বলে এই বিধি? এই বিধি অনুযায়ী, কোনও দল বা প্রার্থী এমন কোনও কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্ত হবেন না যা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে মতভেদ বাড়াতে পারে বা পারস্পরিক বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে পারে বা বিভিন্ন জাতি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় বা ভাষাগত উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এই বিধানে আরও বলা আছে যে ভোটের জন্য জাত বা সম্প্রদায়ের অনুভূতির প্রতি কোনও আবেদন থাকতে পারে না। মসজিদ, গির্জা, মন্দির বা অন্যান্য উপাসনালয়কে নির্বাচনী প্রচারের ফোরাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
মোদী শুধুমাত্র হিন্দু এবং শিখদের ভাবাবেগের তারণায় ভোট চেয়েই চুপ করেননি, বিরোধী দল যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সমর্থন করে, এই দাবিও করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আবেদনকারী বলেছেন যে তিনি ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ নং ধারার (গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধি) অধীনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার জন্য এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে মোদীকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তবে তাতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।