সোমবার কেরালায় নিজের কেন্দ্র ওয়েনাড়ে রোড শোয়ের পর জনসভা করেন রাহুল গান্ধী। আর সেই মঞ্চ থেকেই বিজেপি এবং তার ভাবগুরু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ‘এক জাতি, এক ভাষা, এক নেতা এবং এক মানুষ’ তত্ত্বকে তুলোধনা করলেন তিনি। বললেন, এই নির্বাচনে মূল লড়াই আরএসএস এবং কংগ্রেসের ভাবাদর্শের বিরোধের লড়াই।
বিজেপির ধ্যানধারণার বিরোধিতা করে রাহুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি কিছুদিন যাবৎ এক জাতি, এক ভাষা, এক নেতা এবং এক মানুষ তত্ত্বে বিভোর রয়েছে। দেশ সম্পর্কে মৌলিক ভুল বোঝাই এই যুক্তি খাড়া করে। কেরালা যেখানে অধিকাংশ মানুষ মালয়ালিতে কথা বলেন, হিন্দি প্রায় বোঝেন না। সেখানে দাঁড়িয়ে ভাষা-বিবাদকে উসকে দিয়ে রাহুল বলেন, ভাষাকে রাষ্ট্র ওপর থেকে চাপিয়ে দিতে পারে না। ভাষা হল যা হৃদয় থেকে উৎসারিত হয়।
তাঁর কথায়, কেরালার কোনও মানুষকে যদি বলা হয়, আপনার ভাষাটা হিন্দির চেয়ে খারাপ। তাহলে তা ভাষাকে নয়, কেরালার মানুষের অপমান। কেরালার কাউকে যদি বলা হয়, তোমার হৃদয় থেকে যে অনুভূতি বেরিয়ে আসছে তা উত্তরপ্রদেশের লোকটার থেকে খারাপ তাহলে কী হবে?
রাহুলের মতে, মালয়ালম শুধুমাত্র একটা ভাষা নয়। এটা আপনাদের সভ্যতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। একটি শিশুকে যখন মালয়ালম শেখানো হয়, তখন কেবলমাত্র কথা বলার জন্য শেখানো হয় না। ভাষাশিক্ষার সঙ্গে তাকে কেরলের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাও পড়ানো হয়। শিশুটিকে শেখানো হয় কীভাবে শুনবে, কী ব্যবহার করবে, কীভাবে শ্রদ্ধা দেখাবে। আর এ সবই মাতৃভাষার মাধ্যমে শেখে একটি শিশু।
তাঁর সংযোজন, এটা ঠিক যেন একটি পুষ্পস্তবকের দিকে তাকিয়ে লাল গোলাপকে বললাম, দেখো আমরা লাল রং পছন্দ করি না। তুমি সাদা হয়ে যাও। রাহুলের দাবি, ভারতও একটি পুস্পস্তবকের মতো। এখানে সব রংয়ের ফুল আছে। আর সকলেই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। ভারতে কেবলমাত্র একজনই নেতা থাকবেন, এই ধ্যানধারণা দেশের গোটা যুব সমাজের পক্ষে অপমান। আমার অটো রিকশা চালক ভাই, একজন পুলিশকর্মী কি আমাদের নেতা হতে পারেন না? প্রশ্ন সোনিয়া-পুত্রের।