একুশের ভোটযুদ্ধে ভরাডুবির পর থেকেই শনির দশা শুরু হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তারা। এবার ভোটের দোরগোড়ায় ফের প্রকাশ্যে চলে এল গেরুয়া শিবিরের অন্তর্কলহ। বর্ধমান পূর্ব আসনে অসীম সরকারকে প্রার্থী করায় বিজেপির অন্দরে আগে থেকেই চাপা ক্ষোভ ছিল। বুধবার প্রার্থী বদলের দাবিতে বৈঠক করে সেই অসন্তোষ প্রকাশ্যে আনলেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিনে পূর্বস্থলী, মেমারি এবং কালনার একাধিক জায়গায় প্রার্থী বদলের দাবিতে পোস্টার পড়েছিল। এমনকি অসীমের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ক্ষোভ প্রশমনে দলের ‘অভিমানী’ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অসীম। তাতে চিড়ে ভেজেনি। গতকাল সন্ধ্যায় কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া স্টেশনের কাছে একটি লজে বৈঠক করেন বিজেপির ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা-কর্মীদের একাংশ। ছিলেন ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সন্তোষ রায়। ছিলেন ননী সিংহ, প্রবীণ নেতা উদয় ঘোষরাও।
প্রসঙ্গত, ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে দলের তরফে কয়েকটি নাম উচ্চ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দল প্রার্থী করে নদিয়ার হরিণঘাটার বিধায়ক অসীমকে। তার পরেই দলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সভায় সন্তোষ বলেন, ‘ওঁকে (অসীম) প্যারাসুটের মতো নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই ওঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রার্থী করার আগে ওঁকে কয়েক মাস ধরে জেলার ভূগোল চেনানো উচিত ছিল। এই প্রার্থীকে বদল করতে হবে। বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, আমাদের ক্ষোভ কিছু রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।’
তাঁর আক্ষেপ, যাঁরা ‘ভূমিপুত্র’ হয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রার্থী দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ঘটনা গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটেও ঘটেছিল। প্রার্থী নির্বাচন ঠিক মতো না হওয়ায় দলীয় কর্মীরা জেতার মানসিকতা নিয়ে ময়দানে নামেননি। ননীর দাবি, ‘রাজ্য নেতৃত্ব এখানে এসে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করুন। তাঁরা জানুন, কাকে কর্মীরা প্রার্থী হিসেবে চান।’ দলকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে উদয়ের বক্তব্য, ‘এর পরেও রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বের টনক না নড়লে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন অনেক কিছু দেখা যাবে।’