লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই প্রথম দফায় বাংলার ২০ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছিল বিজেপি। আসানসোলের প্রার্থী করা হয়েছিল ভোজপুরী গায়ক-নায়ক পবন সিংকে। কিন্তু যেদিন নাম ঘোষণা করা হয়, তার পরের দিনই বেঁকে বসেন তিনি। অবশেষে ফের নতুন করে আসানসোলে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। প্রার্থী করা হয়েছে গত বার বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে জেতা সুরেন্দ্র সিংহ আলুওয়ালিয়াকে। আর তারপরেই প্রকাশ্যে চলে এল দলীয় কোন্দল! জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে দল প্রার্থী না করায় আনন্দে মাততে দেখা গেল দলের একটি অংশকে। এর বিরুদ্ধে পাল্টা সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে জিতেন্দ্রর অনুগামীদেরও। এই স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানের ঠেলায় আসানসোলে অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির।
গত এক মাসে আসানসোলে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে অনেকের নাম নিয়েই জল্পনা চলছিল কর্মীদের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে সুরেন্দ্রর সঙ্গে আলোচনা চলছিল জিতেন্দ্রর নামেও। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম প্রার্থী তালিকায় আসানসোলের জন্য ভোজপুরি গায়ক-নায়ক পবন সিংহের নাম ঘোষণার পর যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। তৃণমূলের শত্রঘ্ন সিন্হার বিরুদ্ধে তখন থেকেই দলের জেলা নেতৃত্ব এক জন স্থানীয় প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছিলেন। সুরেন্দ্রর বেড়ে ওঠা আসানসোলের খনি-শিল্পাঞ্চলেই। তবে গত পাঁচ বছরে বর্ধমান-দুর্গাপুরে সাংসদ হিসাবে তাঁকে পাশে পাওয়া নিয়ে সেখানে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু তার পরেও আসানসোলের মাঠ সুরেন্দ্রর কাছে পরিচিত হওয়ায় তাঁকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেন দলীয় নেতৃত্ব। আর তার পরেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। গোটা লোকসভা কেন্দ্র জুড়েই দেওয়াল লিখন শুরু করে দেন তাঁরা।
সেই আবহে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র জিতেন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীদের উচ্ছ্বাসের ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। গাড়িতে করে যাওয়ার সময় নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করে তাঁকে গানের তালে তালে বলতে শোনা যায়, ‘হল না, হল না!’ গাড়ির পিছনের আসনে বসা তাঁর অনুগামীরাও সুরে সুর মেলান। বিজেপির একটি অংশের দাবি, জিতেনের নিশানায় ছিলেন জিতেন্দ্র (আসানসোলের রাজনীতিতে তিনি জিতেন নামেই সমধিক পরিচিত)। দলের একটি সূত্রে খবর, আসানসোলে ‘জিতেন্দ্র-বিরোধিতা’র বিষয়টি ‘চাপা’ ছিল। প্রকাশ্যে সে ভাবে কেউ মুখ খুলতেন না। কিন্তু জিতেনের ‘জিতেন্দ্র-বিরোধী’ স্লোগানে সব প্রকাশ্যে চলে এল বলে মনে করা হচ্ছে।