একদিকে কোচবিহারে যখন অনন্ত মহারাজ বেসুরো গাওয়ায় রাজবংশী ভোট নিয়ে চিন্তায় গেরুয়া শিবির। তখন অন্যদিকে, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এই দুই কারণে উত্তরবঙ্গে প্রমাদ গুনছে গেরুয়া শিবির। পরিস্থিতি এমনই যে অনন্ত মহারাজের ক্ষোভ প্রশমন করতে ও রাজবংশী ভোট নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই কোচবিহারে থেকে ভোট প্রচার শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, দলের মধ্যে বিদ্রোহ মেটাতে এপ্রিলের প্রথম দিকেই পাহাড় সফরে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
জানা গিয়েছে, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাহাড়ে দুটি জনসভা করতে পারেন শাহ। পাশাপাশি সেখানে দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে আলাদা করে সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন তিনি। তার আহে পাহাড়ে দলের বিদ্রোহী বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকে বোঝাতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য নেতারা। এদিকে, বাংলায় প্রথম নির্বাচনী সভা ৪ এপ্রিল কোচবিহারে করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৭ এপ্রিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কেন্দ্র বালুরঘাটে ও জলপাইগুড়িতে জোড়া সভা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এখনও পর্যন্ত ১৫টি সভা রাজ্যে করবেন বলে ঠিক রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কোচবিহারে রাজবংশী ভোট বড় ফ্যাক্টর। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে কোচবিহারের ‘স্বঘোষিত’ মহারাজ অনন্ত রায়কে কাছে টানতে তাঁর আসামের বাড়িতেও গিয়েছিলেন শাহ। এরপর অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করে বিজেপি। কিন্তু বর্তমানে কিছুটা বেসুরো অনন্ত। বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে গুরুত্ব দেয় না বলে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছিলেন তিনি। গত নভেম্বরে কলকাতায় অমিত শাহর সভাতেও তিনি আসেননি। দাবি করেন, আমন্ত্রণ করা হয়নি তাঁকে। কোচবিহারের সভা করতে গিয়ে অনন্তর সঙ্গে আলাদা কথা বলতে পারেন মোদী। তাছাড়া, রাজবংশী অধ্যুষিত ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে জেতা আসন হেরে গিয়েছে বিজেপি। ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়কে লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে ঘাসফুল শিবির। ফলে রাজবংশী ভোটে তৃণমূল থাবা বসানোর আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরে।
এদিকে, দার্জিলিংয়ের প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তার চাপ বাড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছেন কর্শিয়াংয়ের বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীর দাবিতে সরব রয়েছেন বিষ্ণুপ্রসাদ। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে কার্শিয়াংয়ে আসার কথা অমিত শাহর। জনসভা করে বিজেপির পক্ষে হাওয়া তুলবেন। সেখানে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন। বিজেপির দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে অনুরোধ করেছে বিষ্ণুপ্রসাদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। রবিবার বিকেল পর্যন্ত যা খবর, বিষ্ণুপ্রসাদ নিজের অবস্থানে অনড়। শীঘ্র প্রচারে নামার কথাও বলেছেন তিনি।