সম্প্রতি দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ কার্যকর করেছে মোদী সরকার। তা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে নানান জায়গায়। নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে অনড় মতুয়ারা। প্রসঙ্গত, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁর সই করা কার্ড থাকলেই নাগরিকত্ব মিলবে। সেই মতো কার্ড বিতরণ আরম্ভ হয়। পূর্ব বর্ধমান, নদীয়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলার বহু পরিবারের কাছে কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের অভিভাবকদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়। পরিবারে কতজন সদস্য রয়েছেন তাও কার্ডে লেখা হয়। নিচে সাংসদের সইও ছিল। বিধাসভা ভোটের আগে এই কার্ডকে বিজেপি ব্যবহার করেছে ভোট আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য যেসমস্ত নথি জমা করতে বলেছে তাতে কার্ডের কোনও উল্লেখ নেই। এহেন পরিস্থিতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন মতুয়ারা। এখন কার্যত হিতে বিপরীত হয়ে গিয়েছে বিজেপি সাংসদের দেওয়া কার্ড।
এপ্রসঙ্গে বিভিন্ন এলাকার মতুয়ারা বলছেন, জানানো হয়েছিল যে কার্ড থাকলে নাগরিকত্ব পাওয়ায় অসুবিধা হবে না। অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন স্পষ্ট হয়েছে, ওই কার্ডের কোনও গুরুত্ব নেই। তবে কেন তাঁদের মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল? প্রশ্ন তুলেছেন মতুয়ারা। তাঁদের কথা অনুযায়ী, ২০১৯ সালের শেষদিকে বিজেপির সাংসদ কার্ড বিলি করেছিলেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও অনেককেই কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কার্ডের জন্য অনেকেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন। নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে মোদী সরকারের শর্তগুলোকে কেন্দ্র করে মতুয়ারা আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন। তৃণমূলের সভা, মিছিল ও প্রচারে মতুয়াদের ভিড় বাড়ছে, তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। মতুয়ারা বলছেন, নাগরিকত্বের টোপ দেখিয়ে নির্বাচনে একাধিকবার ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিল পদ্মশিবির। কার্ড বিলি করে, পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ভোট পেয়েছে। কিন্তু এবার মতুয়াদের সাফ কথা, তাঁরা আর বিজেপিকে বিশ্বাস করবে না। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পূর্ব বর্ধমান জেলার সভাপতি সুপ্রভাত গাইন বলেন, যেসব নথি জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে তা অনেকের কাছেই নেই। ফলত বিনা শর্তে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।