লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে সাংবাদিক সম্মেলন করে ফের মোদী সরকার তথা বিজেপিকে একহাত নিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। এদিন তথ্য তুলে ধরে মোদী সরকারের ১০ বছরের ব্যর্থতা তুলে ধরল ঘাসফুল শিবির। বুধবারের পর ফের পাঁচ ইস্যুতে মোদী সরকারের জিরো গ্যারান্টিকে তীব্র আক্রমণ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও শান্তনু সেন। এর পাশাপাশি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্বেতপত্র প্রকাশের খোলা চ্যালেঞ্জ ও রাজ্যের সব আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে না পারায় বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “১৭৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। কিন্তু এখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জের জবাবে কোনও উত্তর দিতে পারল না বিজেপি। ভোট ঘোষণা হয়ে গেলেও এখনও রাজ্যের ৪২ আসনে প্রার্থীর নামও ঘোষণা করতে পারেনি তারা। মোদী সরকার বলেছিল ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা হবে। কিন্তু যদি দ্বিগুণ করতে হয় তাহলে ২০১৫ থেকে বছরে ১০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাস্তব বলছে দ্বিগুণ তো দূর কাছাকাছিও পৌঁছাতে পারেনি তারা। কৃষকের আয় বেড়েছে মাত্র ৩.৫ শতাংশ।”
পাশাপাশি তৃণমূলের অভিযোগ, স্বচ্ছ ভারত মিশনেও ডাহা ফেল মোদীর গ্যারান্টি। গত ৫ বছরে বিপজ্জনক ট্যাঙ্ক ও নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে গোটা দেশে ৩০৮ জন সাফাই কর্মী প্রাণ দিয়েছেন। ভারত মালা প্রকল্প যখন শুরু হয়েছিল তখন ছিল ৫৫০টি জেলা, আর এখন তা হয়েছে ৮০৬টি জেলা। তথ্য বলছে, এতদিনে এই প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩৯ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। উল্টোদিকে প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। মোদীর সাধের আয়ুষ্মান ভারত নিয়েও বড়সড় দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছে সিএজি। সেই তথ্য তুলে ধরে চন্দ্রিমা বলেন, বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে ৭.৫ লক্ষ ভুয়ো উপভোক্তাকে পাওয়া গেছে। মৃত ঘোষণা করা ৪০০ জন রোগীকে এক কোটিরও বেশি টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনায় একই অবস্থা। বাস্তব ছবিটা বলছে, গত ২২-২৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত ১.২ কোটি পরিবার একটি সিলিন্ডারও কেনেননি। ১.৫ কোটি পরিবার গোটা বছরে মাত্র একটি সিলিন্ডার কিনেছেন। গোটা প্রকল্পটি যে কতটা ফ্লপ এটাই তার প্রমাণ।
সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ব্রিটিশ আমলের থেকেও খারাপ। এদিকে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করার পরেই নরেন্দ্র মোদীর হোয়াটসঅ্যাপ ‘বিকশিত ভারত’ বিজ্ঞাপন বন্ধ করা হল কমিশনের তরফে। ‘‘মোদী সরকার কী জানত না নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হওয়ার পর এভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় না? কমিশন সঠিক কাজ করেছে। ‘বিকশিত ভরত’ বিজ্ঞাপন দেখলেই বোঝা যায় কোথায় ওরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। বলছে আত্মতুষ্টির কথা অথচ আত্মতুষ্ট হওয়ার মতো কিছু হয়নি। অর্থাৎ মানুষকে এখনও বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে যে ভারত বিকশিত কীভাবে’’, কটাক্ষ চন্দ্রিমার।