কার্যত দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই ভোট-আবহে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। আর এই ভোটের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে স্লোগান ও দেওয়াল লিখনের ইতিবৃত্ত। এও বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। গোটা দেশের নিরিখে বাংলাতেই তুলনামূলকভাবে আশ্চর্য ও অভিনব স্লোগান, দেওয়াল লিখনের জন্ম হয়েছে। ভারতে আর কোনওখানেই অবশিষ্ট নেই দেওয়াল লিখনের চল। কিন্তু বাংলায় তা এখনও স্বমহিমায়।নেতামন্ত্রীদের ভোট-আকাঙ্ক্ষাকে হাস্যরসের মোড়কে মুড়ে ‘দাদাঠাকুর’ শরৎচন্দ্র পণ্ডিত লিখেছিলেন, ”ভোট দিয়ে যা/ আয় ভোটার আয়। মাছ কুটলে মুড়ো দিব/ গাই বিয়োলে দুধ দিব, দুধ খেতে বাটি দিব।” ইত্যাদি। শেষে এসে মোক্ষম ধাক্কা, ”কোনও কাজে লাগব না/ যাদুর কপালে আমার ভোট দিয়ে যা।”
উল্লেখ্য, বহুল পরিচিত ছড়াকেই কেবল নয়, সেই সময়ের জনপ্রিয় গানের লাইনকেও পালটে তিনি করেছিলেন, ”আমি ভোটের লাগিয়া ভিখারি সাজিনু/ ফিরিনু গো দ্বারে দ্বারে।” প্যারডি গানের ব্যবহার করা পরবর্তী সময়ে দারুণ ভাবে কাজে লাগিয়েছিল সিপিআই। ১৯৫৭-৫৮ সালেপান্নালাল ভট্টাচার্যের কণ্ঠস্বরে শ্যামাসংগীত ‘আমার সাধ না মিটিল’-কে পালটে দিয়ে তারা তৈরি করেছিল, “আমার সাধ না মিটিল/ ফাঁড়া না কাটিল/ মেয়াদ ফুরায়ে যায় মা।/ জনমের শোধ ডাকি গো/ মা তোরে/ এবার জেতাবি আয় মা।” সেযুগে এমন বিভিন্ন প্যারডি তৈরি করে তা ব্যবহার করা হত নির্বাচনী প্রচারে।