জল্পনায় ইতি টেনে শুক্রবার বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন অর্জুন সিং। আর এই পরিস্থিতিতেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে পদ্মশিবিরের আভ্যন্তরীণ কোন্দল। বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। নিচুতলার কর্মীরা তো বটেই, পাশাপাশি বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র কোনওরকম রাখঢাক না করেই অর্জুনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, আদর্শগত কারণে নয়, ব্যক্তিগত স্বার্থেই দলবদল করছেন। প্রসঙ্গত, বিজেপির টিকিটে লোকসভা যাত্রার ছাড়পত্র জুটিয়ে গত ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফের তৃণমূলে ফিরে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং। জোড়াফুল শিবিরে ফিরে যাওয়া অবধি নানা ইস্যুতে জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম সহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে অর্জুনের বিবাদ চরমে পৌঁছয়। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাকযুদ্ধের পাশাপাশি সংঘর্ষও শুরু হয়। অর্জুনকে যাতে কোনওভাবেই তৃণমূলের টিকিট দেওয়া না হয়, তার জন্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দরবার শুরু করে তাঁর বিরোধী অংশ। এহেন পরিস্থিতিতে বারাকপুরে দলের প্রার্থী হিসেবে পার্থ ভৌমিকের নাম ঘোষণা করে দেয় ঘাসফুল শিবির।
এরপরই তড়িঘড়ি বিজেপিতে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন অর্জুন। বৃহস্পতিবার ফের সিঙ্গল ফুলে যাওয়ার ঘোষণা করা মাত্রই ফুঁসে উঠেছেন বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নৈহাটির মামুদপুরের বাসিন্দা ফাল্গুনী। পোড় খাওয়া এই নেত্রীর নামই এবার বারাকপুরে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে চর্চায় ছিল। কিন্তু শেষমেশ টিকিট পাননি তিনি। ফাল্গুনীদেবী বলেন, “রাজনৈতিক আদর্শের কারণে যোগ দিলে তাঁকে স্বাগত জানাতাম। কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য, শুধু টিকিটের জন্য দলে আসছেন। কর্মীরাই তা বিবেচনা করবেন, দিশা ঠিক করবেন। দেখা যাচ্ছে, তিনি কোন আদর্শের জন্য নয়, ব্যক্তি স্বার্থেই দলবদল করছেন। তৃণমূল টিকিট দেয়নি বলেই ২০১৯ সালে বিজেপিতে এসেছিলেন। টিকিট পেয়ে এমপি হয়েছিলেন। মাঝে তৃণমূলে যান। এবারও টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে ফিরে আসছেন। এই রাজনীতি সমর্থনযোগ্য নয়।” উল্লেখ্য, ১৯৯৬ থেকে বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ফাল্গুনী পাত্র। “আমি তৃণমূলে আসার জন্য ২০১১ সালে প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কিন্তু আদর্শকে বিসর্জন দিইনি। অর্জুন সিং এতই বাহুবলী, যে পুরভোটে নিজের বুথেও জিততে পারেন না। গত পুর ভোটে তিনি বিজেপিতে ছিলেন, নিজের লোকদের টিকিট পাইয়ে দিয়েছিলেন। পরে তারা তৃণমূলে চলে গিয়েছিল”, এদিন অর্জুনকে একহাত নিয়ে বলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী। নির্বাচনের প্রাকলগ্নে এহেন ঘটনা যে গেরুয়া-নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলবে, তা বলাই বাহুল্য।