দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। অবশেষে বিল থেকে আইনে পরিণত হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পরে সোমবার দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) জারি করার কথা জানিয়েছে তারা। লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। উঠেছে একগুচ্ছ প্রশ্নও।
সিএএ কী, কোথায় এবং কী ভাবে তার মারফত নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেতে আবেদন করতে হবে— এ রকম বিভিন্ন বিষয় ইতিমধ্যেই খোলসা করার চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু তাতেও ধোঁয়াশা পুরোপুরি কাটছে না। এখনও স্পষ্ট নয় বহু প্রশ্নের উত্তর।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্র জানিয়েছে, আবেদনকারীর কাছে যদি নাগরিকত্বের আবেদনের জন্য প্রামাণ্য নথি না থাকে, তা হলে জেলা স্তরে থাকা যাচাই-কমিটি বাড়তি নথি জমা দিতে বলতে পারেন। কিন্তু তার পরেও আবেদনকারী নথি দিতে না পারলে, সেই আবেদন খারিজ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরে নেওয়া হবে নাকি ফের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে, সেই বিষয়টি এখনও বিজ্ঞপ্তিতে একেবারেই স্পষ্ট নয়। আবার, ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যাঁরা কার্যত এক-কাপড়ে এ দেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের সকলের কাছে আগের দেশের নথি থাকবে কী করে? যদি তা না-থাকে, তবে এখন কী ভাবে তা জোগাড় করা সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন।
উত্তর মিলছে আরও অনেক প্রশ্নেরই। যেমন, কোনও ব্যক্তি ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়েই যে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তা প্রমাণ হবে কীভাবে? কোনও আবেদনকারী নিজেকে যে ধর্মাবলম্বী বলে দাবি করছেন, তিনি যে আদতে তা-ই, সে কথা প্রমাণ হবে কিসের ভিত্তিতে? ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তির কাছ থেকে ধর্ম সংক্রান্ত শংসাপত্র জোগাড়ের বাধ্যবাধকতা দুর্নীতির নতুন উৎস হয়ে দাঁড়াবে না তো? সিএএ-তে আবেদন করলে কি তিনি বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য হবেন? সে ক্ষেত্রে নথি দিতে না পারলে কিংবা আবেদন খারিজ হলে, তাঁর পরিণতি কী হবে? আবেদনের পরে নথির কারণে তা খারিজ হলে ভবিষ্যতে যে হেনস্থার মুখে পড়তে হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?