জল্পনার অবসান। আজ থেকেই সারা দেশজুড়ে সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করল মোদী সরকার। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধীরা তীব্র আপত্তির কথা জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় প্রথম থেকে সিএএ-এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। নবান্নে আজ সাংবাদিক সম্মেলনেও তিনি মুখর হলেন এর বিরুদ্ধে। “যদি কোনও বৈষম্য হয় সে জিনিস আমরা মানি না। ধর্ম বৈষম্য, বর্ণ বৈষম্য বা লিঙ্গ বৈষম্য হোক। আজকে যাদের বলা হচ্ছে, ছেলের হাতে মোয়া। বলবেন আপনারা পোর্টালে নাম লিখুন। পোর্টালে তো সব ধর্মের মানুষই নাম লেখাবে। কিন্তু সেই নাম আদৌ কার্যকরি হবে। আর যদি ক্যা করে বলে আপনারা নাগরিক। তাহলে এতদিন কি তারা নাগরিক ছিল না? সেই জন্যই নমঃশূদ্র ও মতুয়া ভাইবোনকে আধার কার্ড বাতিলের চক্রান্ত হয়েছিল? তার মানে নতুন কিছু করবে, পুরনোটার কোনও গুরুত্ব থাকবে না। আমাদের থিওরি, আমরা সবসময় বলি সবাই নাগরিক। আজ কেউ চাকরি করছে, কেউ স্কুলে পড়ছে, কেউ জমিজমা কিনে দীর্ঘদিন ধরে বসতি তৈরি করেছে। তার মানে সেগুলি ভ্যালিড নয়? আইনি প্রশ্ন হবে না তো? আগে যে সুযোগ সুবিধা পেতেন, সব অবৈধ হয়ে যাবে? তাদের ভোটেই তো মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, গ্রামসভা, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, কর্পোরেশন হয়েছে। সেই ভোটের, সেই নাগরিকত্বের কোনও মূল্য নেই? নাগরিকত্ব ভোটের আগে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে?”, প্রশ্ন তুললেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমি বিস্তারিত দেখার পর মঙ্গলবার বলব। তবে ক্যা দেখিয়ে এনআরসি নিয়ে এসে কারও যারা এখানকার নাগরিক, তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় আমরা কিন্তু চুপ থাকব না? আমরা স্ট্রংলি এটার প্রতিবাদ করব। আমরা আগেই জানিয়ে গেলাম। দ্বিতীয়ত, নো এনআরসি। এনআরসি মানতেই পারি না। আর ক্যা-এর নাম করে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে এই চালাকিও আমরা করতে দেব না। ভোট আজকে আছে, কাল ফুরিয়ে যাবে। এসব লোক দেখানো, প্রতারণা, ছলনা। এতে যদি কেউ খুশি হয়, আমি খুশি হব। কিন্তু কেউ দুঃখ পায় আমি দুঃখ পাব। তাই অপেক্ষা করছি টোটাল আইনটা দেখার জন্য। এখনও মনে করি আমাদের এখানে যারা আছেন, সারা ভারতবর্ষে, যারা ভারবর্ষে বসবাস করে, বাংলায় বসবাস করে, প্রত্যেকে নাগরিক। তাঁদের নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার সবই থাকবে।” এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। “এই নতুন আইন কারও আগের অধিকার বাতিল করে দেবে না তো? আমার মাথায় এটা আসছে তার কারণ, আগের আইনটায় তাই বলা ছিল। এবারের আইনটা কী করছে আমাকে দেখতে হবে”, উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।