কার্যত দুয়ারে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে প্রস্তুতিতে কোনওরকম ত্রুটি রাখতে চায় না রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। ২০১৯ সালের পর ২০২৪, অর্থাৎ পাঁচ বছর পর আবার ব্রিগেডে সমাবেশ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ, রবিবার লোকসভা নির্বাচনের প্রাকলগ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জনগর্জন’ সভার জন্য তৈরি ব্রিগেড। মোদী সরকারকে কার্যত অত্যাচারী ব্রিটিশ এবং জমিদারদের সঙ্গে এক আসনে বসিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের যেমন পতন হয়েছে, তেমন কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে উৎখাত হবে বিজেপিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এটাই পোস্ট করা হয়েছে। আজ, রবিবার লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে এই বার্তা ছড়িয়ে দেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, বাংলার ৪২টি আসনের প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেই তালিকা এবার ব্রিগেডে কয়েক লক্ষ মানুষের সামনেই প্রকাশ্যে আনবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কর্মী–সমর্থকরা তাকিয়ে আছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে কী বার্তা দেন নেত্রী ও দলের সেনাপতি তা শোনার জন্য। আজকের সভায় যোগ দিতে ইতিমধ্যেই সব জেলা থেকে মানুষ আসা শুরু করে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা গত পাঁচদিন ধরে আছেন। বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সেইসব জায়গায় গিয়ে দেখা করে এসেছেন তাঁদের সঙ্গে।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের জমানায় দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা, গ্রাম সড়ক যোজনা–সহ একাধিক প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ টাকা বকেয়া আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রাপ্য আদায়ের দাবিতে কলকাতা থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত আন্দোলন করেও লাভ হয়নি। কেন্দ্রের এই বাংলা বিরোধী মনোভাবের প্রতিবাদে তাই ‘জনগর্জন’ করতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখানেই দেখা যাবে অভিনব ঘোষণা। কালীঘাটে দলীয় দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করেই আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন ঘোষণার দু’একদিন আগে–পরে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এবার দুটি রীতিই বদলে প্রকাশ্য জনসভায়, ব্রিগেডের ঐতিহাসিক ময়দান থেকে প্রার্থী ঘোষণা করবে তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়া ব্রিগেডের মঞ্চ–সহ গোটা ব্যবস্থার মধ্যে আধুনিকতা থাকবে। এই জনগর্জন সভার জন্য মোট ৩টি মঞ্চ করা হয়েছে। একটিতে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়–সহ তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্য দুটির একটিতে বুদ্ধিজীবী ও আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা। আর তৃতীয় মঞ্চে থাকবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ–বিধায়করা। ভিন রাজ্যের নেতা–নেত্রীদেরও দেখা যাবে। ‘আচ্ছে দিন’–এর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদী বাংলা তথা দেশের মানুষকে যে ভয়বহ দিন উপহার দিয়েছেন সেটার তথ্য ও ছবি ব্রিগেডের মঞ্চে তুলে ধরবে তৃণমূল। ঘটতে পারে যোগদানের ঘটনাও।