আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে কোনও দলের সঙ্গেই জোট করছেন না তিনি। একাই ৮০ আসনে লড়াই করবে তাঁর দল। গত ১৫ জানুয়ারি তাঁর জন্মদিনেই এ কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে ফের সে কথা জানালেন ‘বহেনজি’। তিনি লেখেন, সংবাদমাধ্যম গুজব ছড়াচ্ছে যে বিএসপি ইন্ডিয়া জোটে শামিল অথবা তৃতীয় মোর্চা গঠন করতে পারে। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এসবই মিডিয়ার পরিকল্পিত গুজব। বিএসপি কারও সঙ্গে নেই। একলা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হয়নি।
প্রসঙ্গত, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বিএসপি এবং এসপি-র মধ্যে জোট হয়েছিল। দুই দল যথাক্রমে দশটি এবং পাঁচটি আসনে জয়লাভ করে সেবার। কিন্তু ভোটের পরই সেই জোট ভেঙে যায়। ২ বছর আগের বিধানসভা ভোটেও আর দুই দলের মধ্যে বোঝাপড়া হয়নি। সেই ভোটে মায়াবতী কার্যত ওয়াকওভার দেন বাকিদের। তিনবারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলিত নেত্রী হিসাবে দেশে সবচেয়ে পরিচিত মুখ বহেনজির পার্টি বিধানসভায় মাত্র একটি আসনে জয়লাভ করে। প্রাপ্ত ভোট ছয় শতাংশের নিচে নেমে যায়।
তারপর সপা এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মায়াবতীর সঙ্গেও কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। বাইশের বিধানসভা ভোট এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস-এসপি-বিএসপি জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সোনিয়া। বিএসপি নেত্রী বেশ কিছুদিন সেই প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখে শেষ পর্যন্ত তা খারিজ করে দিয়েছেন।
আসলে দুটি কারণে কোনও জোটেই নাম লেখাতে চাইছেন না ‘বহেনজি’। প্রথমত, বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে যোগ দিয়ে তিনি মোদী-শাহের রোষানলে পড়তে চান না। তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত ধামাচাপা পড়েছে। আর মায়াবতীর ধারণা, মোদীই ফের দিল্লির মসনদে বসতে চলেছেন। তাই বিজেপি বিরোধী জোটে গেলে নির্বাচনের পর ইডি সিবিআইয়ের ধাক্কা সামলাতে হতে পারে। দ্বিতীয়ত, মায়াবতী মনে করছেন, তাঁর দলের এখন যা সাংগঠনিক অবস্থা তাতে বিজেপি কিংবা এসপি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে গেলে বিএসপির অবশিষ্ট ভোটও হাতছাড়া হয়ে যাবে।