বাংলায় একশো দিনের কাজে ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে দিল্লিতে দরবার শুরু করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ যার ফলস্বরূপ এখনও বাংলার পাওনা টাকা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। দু’বছর ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না তারা। খোদ রাজ্য উদ্যোগ নিয়ে ৫৯ লক্ষ বঞ্চিত শ্রমিকের বকেয়া মজুরি দিয়েছে। ফলে লোকসভা ভোটের আগে বঙ্গে চাপে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় এসে ড্যামেজ কন্ট্রোলে আসরে নামেন মোদী, কিন্তু মোদীর মিথ্যাচারকে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করেছেন বাংলার পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সেই সঙ্গেই প্রশ্ন তিনি প্রশ্ন তোলেন ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য উত্তরপ্রদেশকে নিয়ে।
শনিবার নদীয়ার সভা থেকে বাংলার ২৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ড নিয়ে অভিযোগ করেন মোদী। কিন্তু যোগীরাজ্যে যে ভুয়ো জব কার্ডের সংখ্যা সর্বাধিক, তা নিয়ে নীরব মোদী। খোদ কেন্দ্রের পোর্টালের তথ্য বলছে, ২০১৪ সাল থেকে উত্তরপ্রদেশে ১ কোটি ২০ লক্ষ ৫৪ হাজার ৯৯৮টি জব কার্ড বাতিল হয়েছে। বাংলায় সংখ্যাটা মাত্র ৩৮ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭০০। কেন বাংলাকেই টার্গেট কেন? উত্তরপ্রদেশের টাকা তো আটকানো হয় না? উঠছে প্রশ্ন। একশো দিনের কাজের নিয়ম বলে, তিন বছরের বেশি সময় যাবৎ কেউ কাজ না চাইলে বা বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে বা মারা গেলে জব কার্ড বাতিল হয়। এমন বেশ কিছু কারণে সারা বছর ধরে সব রাজ্যই জব কার্ড বাতিলের কাজ চালায়। বাংলার পঞ্চায়েতমন্ত্রীর সাফ প্রশ্ন, স্বাভাবিক নিয়মে বাতিল হওয়া কার্ডকে প্রধানমন্ত্রী ‘ভুয়ো’ বলেন কী করে? বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রে তিনি চুপ কেন?
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ২৩.৭৭ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২১.৭১ শতাংশ কার্ড বাতিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। সেখানে বাংলায় গত দুই আর্থিক বছরে জব কার্ড বাতিলের শতকরা হার ১৫.৭৩ শতাংশ থেকে মাত্র ১.২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলার মন্ত্রীর দাবি, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সব রাজ্যকে ‘ভুয়ো’ জব কার্ড বাতিল করতে ‘মিশন মোডে’ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বাংলায় সেই কাজের সিংহভাগ সম্পূর্ণ করেছে। অথচ যোগীরাজ্যে চলতি অর্থবর্ষেও প্রচুর সংখ্যক কার্ড বাতিল হয়েছে। খোদ কেন্দ্রের রিপোর্টেই তা রয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বিগত দু’বছরে যোগীরাজ্যে ৭৮ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৭৩টি জব কার্ড বাতিল হয়েছে। একই সময়কালে বাংলায় মাত্র ২৩ লক্ষ ৪৫ হাজার ৪৭৫টি কার্ড বাতিল হয়েছে।