লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যে সন্দেশখালি কাণ্ডের ফসল ঘরে তুলতে চায়, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আগামী মাসের ৬ তারিখ রাজ্য সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওই দিন তিনি সভা করবেন বারাসতে। বৃহস্পতিবার বিজেপি সূত্রে বলা হয়েছে, রাজ্য সফরে এসে বসিরহাটের মহিলাদের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, সন্দেশখালিতে ইতিমধ্যে দু’বার ঘুরে এসেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও। গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সে জন্য আদালতেও ছুটেছেন তিনি। তবে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সন্দেশখালিতে দেখা যায়নি এখনও। তা নিয়ে ঘরে-বাইরে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। সামনে এসেছে অন্তর্কলহের তত্ত্বও।
এ নিয়ে মুখ খুলে দিলীপ জানিয়েছেন, ‘নেতারা ডাকেননি, তাই যাইনি। ডাকলে নিশ্চয়ই যেতাম।’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ‘রাজ্য সভাপতি ও বিরোধী দলনেতা যাচ্ছেন। আমি তো দলের পদাধিকারী নই এখন। সেই কারণে হয়তো ডাকা হয়নি।’ কিন্তু তাঁর মতো নেতার আন্দোলনে ডাক পেতে কি পদাধিকারী হওয়ার প্রয়োজন পড়ে, রাজ্য সভাপতি থাকাকালে যিনি বিরোধী শিবিরের আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছিলেন? দিলীপের জবাব, ‘হতেও পারে। যাঁরা নেতৃত্বে আছেন তাঁরা ঠিক করছেন কে যাবেন, কে যাবেন না। দল কাল যদি আমাকে ধরনায় বসতে বলে, বসব।’ বিজেপির অন্দরমহলের খবর, বছর খানেক আগে দলের সাংগঠনিক সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই দিলীপ ঘোষ নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছেন।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, দলের সন্দেশখালি অভিযানে দেখা না গেলেও সেই দ্বীপের অদূরে ন্যাজাটে ক’দিন আগে দলের আদিবাসী মোর্চার হয়ে সভা করে এসেছেন দিলীপ। তাঁর কথায়, ‘আদিবাসীরাই সবচেয়ে আক্রান্ত। তাদেরই জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বেশি।’ দলের ‘নব্য’দের দিকে ইঙ্গিত করে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘আজ যে নেতারা সন্দেশখালি নিয়ে টিভিতে গলা ফাটাচ্ছেন তাঁরা ক’জন সন্দেশখালিকে চেনেন? ক’বার গিয়েছেন সেখানে? আমি বহুবার সন্দেশখালি গিয়েছি। সুন্দরবনের আরও বহু দ্বীপে গিয়েছি। যেখানে যেতে পারিনি, সেখানে ভোটের সময় হেলিকপ্টার নিয়ে গিয়েছি।’ দিলীপের এই মন্তব্য থেকে বঙ্গ বিজেপির আদি বনাম নব্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট।