দুয়ারে কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে আসন সমঝোতা নিয়ে একের পর এক রাজ্যে সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। প্রথমেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়ে দিয়েছিলেন, পাঞ্জাবে একা লড়াই করবে তাঁর আম আদমি পার্টি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যে ‘একলা চলো’ নীতি নিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে বেঁকে বসেছিল অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিও। আর এর ফলে হালে পানি পাচ্ছিল গেরুয়া শিবির। তবে এবার ফের গতি পেতে শুরু করেছে ইন্ডিয়া জোট। নানা রাজ্যে জোট নিয়ে জটিলতা কাটতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, দিল্লি-সহ চার রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়ে জোট বেঁধেই লড়বে আপ এবং কংগ্রেস। শনিবার তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, ৭টি লোকসভা আসন বিশিষ্ট দিল্লিতে আসন সমঝোতা কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা ছিল রাজনৈতিক মহলে। শনিবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আপ এবং কংগ্রেস জানিয়ে দিল, তারা দিল্লিতে চার-তিন সমীকরণে লড়বে। শুধু দিল্লি নয়, গুজরাত, হরিয়ানা, গোয়া এবং চণ্ডীগড়ে কী সমীকরণে আসন সমঝোতা হচ্ছে তা-ও জানিয়ে দিল কংগ্রেস এবং কেজরিওয়ালের দল। দিল্লিতে কংগ্রেস আপকে চারটি আসন ছেড়েছে। সেই চারটি আসন হল নয়াদিল্লি, দক্ষিণ দিল্লি, পূর্ব দিল্লি এবং পশ্চিম দিল্লি। বাকি তিন আসন অর্থাৎ উত্তর-পূর্ব দিল্লি, উত্তর-পশ্চিম দিল্লি এবং চাঁদনি চকে লড়বে হাত শিবির।
জানুয়ারিতে কংগ্রেস এবং আপ নেতৃত্ব আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করলেও জট কাটেনি। কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে গঠিত আসন সমঝোতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির অন্য চার সদস্য রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র মোহন প্রকাশ ছিলেন বৈঠকে। সঙ্গে ছিলেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দর সিংহ লভলীও। অন্য দিকে, আপের তরফে রাজ্যসভা সাংসদ সন্দীপ পাঠক এবং দিল্লির দুই মন্ত্রী অতিশী এবং সৌরভ ভরদ্বাজ অংশ নিয়েছিলেন জানুয়ারির রফা-আলোচনায়। জানুয়ারির পর ফেব্রুয়ারিতেও একাধিক বার দুই শিবির বৈঠকে বসেছিল। সেখানেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়।
শুক্রবার আপ এবং কংগ্রেস যৌথ ভাবে পাঁচ রাজ্যের আসন বণ্টনের কথা ঘোষণা করে। কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিক শুক্রবার জানান, ‘১০ লোকসভা আসনের হরিয়ানায় ন’টি আসনেই আপের সমর্থনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। কুরুক্ষেত্র লোকসভা আসনটি ছাড়া হয়েছে আপকে।’ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চণ্ডীগড় লোকসভা আসনে কে লড়বে, তা নিয়ে আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। শেষ পর্যন্ত আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয় কেজরির দল। চণ্ডীগড়ের মতো দুই আসনের গোয়াতেও আপের সমর্থনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেসই। গুজরাতেও আপ এবং কংগ্রেস জোট বেঁধেই লড়বে। জল্পনা মতোই কংগ্রেস, আপকে ছেড়ে দিল দক্ষিণ গুজরাতের ভারুচ আসনটি। এছাড়া গুজরাতের ভাবনগর লোকসভাও তাদের ছেড়েছে হাত শিবির।