দিন কয়েক আগেই পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বহু বাসিন্দার আধার কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে অভিযোগ ওঠে। তারপর একই ঘটনা ঘটে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ, হুগলির মগরা এবং জলপাইগুড়ির একাধিক জায়গাতেও। এমনকী আধার কার্ড বাতিলের চিঠি এসে পৌঁছেছে মতুয়া প্রধান বনগাঁতেও। স্বাভাবিক ভাবেই সভা ভোটের মুখে এ নিয়ে শুরু হয়েছে জোরদার রাজনৈতিক তরজা।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোটে ভর করেই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে জয় হাসিল করেছিল বিজেপি। মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর সাংসদ হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন মতুয়ারা। নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতিও মিলেছিল। সম্প্রতি আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করার নোটিস তাঁদের নাগরিকত্বের আশায় জল ঢেলে দিয়েছে বলে মত অনেকের। মতুয়াদের দাবি, নাগরিকত্ব না দেওয়ার জন্যই পরিকল্পনা করে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করছে কেন্দ্র।
রেশনের সঙ্গে আধার কার্ড যুক্ত থাকার কারণে কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় অনেকেই রেশনের খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বনগাঁর বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ টিকাদার বলেন, আমার নামে নোটিস আসায় রেশনের সামগ্রী পাচ্ছি না। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে পারছি না। অন্যদিকে, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ায় অনুদান বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানালেন বীথিকা মণ্ডল নামে এক মহিলা। তাঁর কথায়, ‘ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমার বৌমা অন্তঃসত্ত্বা। তাঁরও কার্ড বাতিল হয়ে গিয়েছে।’
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমরা কী করে বাঁচব? আমরা ভোট দিয়ে সাংসদ বিধায়ক করলাম! এখন কী আমাদের আত্মহত্যা করতে হবে?’ বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর পদত্যাগ দাবি করেছেন মতুয়াদের একাংশও। আগামী দিনে এর প্রভাব যে লোকসভা ভোটে পড়বে, তা পরিষ্কার।