ফের তাৎপর্যপূর্ণভাবে উপযোগী হয়ে উঠতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এবার আর্টিফিসিয়াল ইনসেমিনেশনকে (এআই) কাজে লাগিয়ে নতুন করে বাংলায় ‘দুগ্ধ বিপ্লব’ ঘটাতে চাইছে রাজ্য প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর। এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাম জমানার ধুঁকতে থাকা দুগ্ধ শিল্পের উন্নয়নের পথে হেঁটেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বাংলার ডেয়ারি চালু করা হয়েছে। তারপর আরও একধাপ এগিয়ে কৃত্রিম গো প্রজননে শুধুমাত্র বকনা বাছুরই যাতে জন্মায়, সে ব্যাপারে আটটি জেলাকে নিয়ে পাইলট প্রজেক্ট শুরু করে রাজ্য। ওই আট জেলা হল উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, নদীয়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ এবং বাঁকুড়া। অল্পদিনেই মিলেছে সফলতা। জানা গিয়েছে, আর্টিফিসিয়াল ইনসেমিনেশনকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই এই আট জেলায় জন্ম দেওয়া সম্ভব হয়েছে মোট ৪৪৮টি সুস্থ বকনা বাছুরের।
এপ্রসঙ্গে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তাদের কথায়, এই ধরনের প্রজনন পদ্ধতিকে নামকরণ দেওয়া হয়েছে ‘সেক্সড সর্টেড সিমেন’। জানা গিয়েছে, কৃত্রিম পদ্ধতিতে ষাঁড়ের শুক্রাণু কোষ সংগ্রহের পর পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে নিষিক্ত করা হচ্ছে, ওই শুক্রাণু গাভীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হলে বকনা বাছুরের জন্ম হবে। বকনা বাছুরের জন্ম নিশ্চিত করার পর তা গাভীর উপর সেটা প্রয়োগ করা হচ্ছে। আরও জানা গিয়েছে, কৃত্রিম গো প্রজননে অভিজ্ঞ জেলা প্রাণীসম্পদ বিকাশ আধিকারিক, প্রাণীচিকিৎসক, প্রাণিবন্ধু ও প্রাণীমিত্রদের কাজে লাগিয়ে সফল হয়েছে ওই পাইলট প্রজেক্ট। গোপালকদের একটা অংশের দাবি, এতদিন কৃত্রিম প্রজনন পন্থা অবলম্বন করা হলেও কোন বাছুর জন্ম নেবে, তা আগের থেকে নিশ্চিত করা সম্ভব হতো না। অনেক সময় এঁড়ে বাছুর জন্মানোর পর বাধ্য হয়ে পথে-ঘাটে তা ছেড়ে দেওয়া হত। নতুন এই পদ্ধতি গো পালনে অনেকটাই সুবিধা এনে দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।