ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কড়া চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, তাঁর আমলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট সময়ে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। তৃণমূলের তরফ থেকেও ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাম আমলে কী হয়েছে তার দায় বর্তমান সরকার নেবে না। এবার খোদ কেন্দ্রের একাধিক অভ্যন্তরীণ চিঠি এবং নথিই ব্যুমেরাং হল মোদী সরকারের জন্য।
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে দু’বছর ধরে আটকে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা। খরচের হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশের শীর্ষ অডিট সংস্থা ক্যাগ। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জন্য ঢাল করেছেন ক্যাগ রিপোর্টকে। এই আবহেই সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসারকে পাঠানো মনরেগা প্রকল্পের ডিরেক্টর ধরমবীর ঝার তিনটি চিঠি। তিনটিই বাংলা ১০০ দিনের কাজের টাকার কিস্তি সংক্রান্ত। প্রথমটি পাঠানো হয় ২২ জুন, ২০২১ তারিখে। এবং অপর দু’টি ওই বছরেরই ১৪ ডিসেম্বর। ২২ জুনের চিঠির ছ’নম্বর পয়েন্টে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার বিষয় ক্লিন চিট দিয়েছে কেন্দ্র।
গত ১৪ ডিসেম্বরের দু’টি চিঠিরই সাত নম্বর পয়েন্টে মনরেগা প্রকল্পের ডিরেক্টরের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বলা হয়েছে— ‘এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের তরফে কোনও ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কাজ পড়ে নেই।’ এমনকী, রাজ্যের এই সংক্রান্ত নোডাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য, অডিট রিপোর্টও কেন্দ্রের কাছে জমা পড়েছে। ঠিক ক’টার সময় মাস্টাররোলে থাকা জব কার্ড হোল্ডারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, তাও মন্ত্রকের অজানা নেই। আবাস প্রকল্প নিয়েও ২০২২ সালের ২৪ মার্চ একটি চিঠি জমা পড়েছে পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসারের কাছে। তাতেও সঠিক সময় খরচের হিসাব জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে।
এই সমস্ত নথিই এবার রাজ্যের তুরুপের তাস হতে চলেছে বলেই মত প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের। তাঁদের দাবি, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সঠিক সময়ে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়েছে। কেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ চিঠিতে রাজ্যকে এব্যাপারে ক্লিন চিট দেওয়াই তার প্রমাণ। সোমবার থেকে বিধানসভায় শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশন। সেখানে ক্যাগ রিপোর্টকে হাতিয়ার করে আওয়াজ তুলতে পারে রাজ্যের বিরোধী শিবির।