শীতের মরসুমে রাজ্যজুড়ে চলছে অকালবর্ষণ। বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হয়েছে একটি উচ্চচাপ বলয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের উপর তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। যার জেরে গতকাল রাজ্যে অল্পবিস্তর বৃষ্টি হয়েছে। গত রাতেও নানা জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায় আজ, শুক্রবারও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। আর এই বৃষ্টি মাথায় করেই জেলায় জেলায় মাধ্যমিকের পথে পরীক্ষার্থীরা। শীত কার্যত উধাও। দিনভর মেঘলা আকাশ থাকার কথা। উত্তরবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা, বিশেষ করে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায়। তুষারপাতের সম্ভাবনা সিকিম ও দার্জিলিঙে উঁচু পার্বত্য এলাকায়। শীতকালীন বৃষ্টিতে সবজি চাষের ক্ষতির আশঙ্কা। শস্য-সহ শীতকালীন সবজিচাষের ক্ষেত্রে এই বৃষ্টি ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করবে। জমিতে নষ্ট হতে পারে ধানও। গাঙ্গেয় বাংলার উপর অক্ষরেখা অবস্থান করছে। পাশাপাশি রয়েছে বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্ত। সেই ঘূর্ণাবর্ত এবং অক্ষরেখা ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত, যা গাঙ্গেয় বাংলার উপর দিয়ে গিয়েছে। একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার রেশ কাটতে না কাটতেই আরও একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এসে হাজির হচ্ছে। নতুন করে আরও একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকবে আগামীকাল, অর্থাৎ ৩রা ফেব্রুয়ারি। বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে বঙ্গোপসাগরে।
দক্ষিণবঙ্গে পূবালী হাওয়ার প্রভাব বাড়ছে। আজ, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টির সম্ভাবনা। মূলত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। আজ যে জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি সেগুলি হল নদিয়া বীরভূম মুর্শিদাবাদ পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। কলকাতা-সহ বাকি জেলায় সন্ধ্যে পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনা। আগামীকাল শনিবার আবহাওয়ার পরিবর্তন। বৃষ্টি বন্ধ হবে। আকাশ পরিষ্কার হবে। তবে তাপমাত্রা আর খুব বেশি নেমে জাঁকিয়ে শীত ফেরার সম্ভবোনা প্রায় নেই বললেই চলে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে আজ শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিংয়ের উঁচু এলাকায় হালকা তুষারপাতের সামান্য সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গের সমতলের জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ভোগাতে পারে কুয়াশা। উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় সকালের দিকে কুয়াশার সম্ভাবনা। ঘন কুয়াশার সতর্কতা কিছু এলাকায়। কুয়াশার দাপট থাকবে, বেশি কুয়াশা হবে মালদা এবং দুই দিনাজপুরে। জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারেও ঘন কুয়াশার সতর্কতা। দার্জিলিংয়ের সমতল এলাকা শিলিগুড়িতেও কুয়াশার দাপট থাকতে পারে। কলকাতায় পূবালী হাওয়ার প্রভাব থাকবে। শীত কার্যত উধাও। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। বেলার দিকে অস্বস্তিকর প্যাচপ্যাচে আবহাওয়া। বিকেলের পরে আর বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনা নেই। নতুন করে তাপমাত্রা অনেকটা কমে জাঁকিয়ে শীত ফেরার সম্ভাবনাও প্রায় নেই। রাতের তাপমাত্রা এই সময়ের যা স্বাভাবিক তার থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। বৃহস্পতিবার রাতের তাপমাত্রা ১৯.৯ ডিগ্রি। কিন্তু গতকাল দিনভর মেঘলা আকাশের জেরে দিনের তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। ২৪.১ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্প দিনে ৯৪ শতাংশ, রাতে ৪৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, এমনই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব পড়বে উত্তর-পশ্চিম ভারতের পার্বত্য এলাকায়। বৃষ্টি হতে পারে পঞ্জাব হরিয়ানা চণ্ডীগড় এবং উত্তর প্রদেশের কিছু অংশে। শুক্র ও শনিবার পর্যন্ত এই বৃষ্টি চলতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন আবহবিদরা।