বুধবারই পূর্ব বর্ধমান সফরে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান শহরের গোদার মাঠে প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি। এবং উক্ত সভা থেকেই দুই বর্ধমান জেলার মোট ১০৩৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করবেন তিনি। এই প্রকল্পগুলি রূপায়ণে রাজ্য সরকারের মোট ১১৯১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বা হবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান শহর থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার মোট ৪৮৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন যা রূপায়ণে ব্যয় হয়েছে ৩৫৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। এর সঙ্গে থাকছে ৮৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস সাধনের বিষয়টিও। সেই সঙ্গে ওই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার মোট ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ২৮১জন উপভোক্তার হাতে সরকারি পরিষেবা তুলে দেওয়ার সূচনাও করবেন বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ওইদিন নিজে কয়েকজনের হাতে পরিষেবা তুলে দেবেন স্বয়ং মমতা। মুখ্যমন্ত্রী আগামীকাল যে সব কাজের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করবেন তার মধ্যে থাকছে বর্ধমান-আরামবাগ রোডের সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজও। ৭৮ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ২৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা হবে। এই রাস্তা সম্প্রসারণ ও সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। কাজ শেষ হলে উপকৃত হবেন দক্ষিণ দামোদরের পাশাপাশি হুগলি এবং বাঁকুড়া জেলার বহু বাসিন্দা।
এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের একটি ট্রমা কেয়ার তৈরির কাজের শিলান্যাস করবেন। ৪ কোটি টাকা খরচ করে তা তৈরি করা হবে। সঙ্গে থাকছে গলস্যার চাঁচাই গ্রামে ইডেন খালের ওপর সেতু তৈরির কাজেরও শিলান্যাস সাধন পর্ব। একই সঙ্গে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ১০০ বেডের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলার মধ্যে সংস্কার হওয়া ৩৯০টি রাস্তার উদ্বোধন হবে আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। বর্ধমান জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি রাস্তার শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করবেন। ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে ফোন করে দুই বর্ধমান জেলার বাসিন্দারা বেহাল রাস্তা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। সেই রাস্তাগুলি চিহ্নিত করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া জল জীবন মিশন প্রকল্পের কাজও বিভিন্ন জায়গায় উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হবে। তবে দামোদরের ওপর সেতু তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু ঘোষণা করেন কিনা সেদিকে অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন। কৃষক সেতুর বিকল্প হিসেবে তা নির্মাণ নিয়ে বহুদিন ধরেই চর্চা চলছে। এছাড়া কালনায় ভাগীরথী নদের ওপর সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই সেতু নির্মাণ নিয়ে কোনও বার্তা দেন কিনা তা জানতেও জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। এই সেতু নির্মাণ হলে পূর্ব বর্ধমানের পাশাপাশি নদিয়া জেলার বাসিন্দারাও লাভবান হবেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।