আরও একবার মোদী সরকারের বঞ্চনাপ্রবণ আচরণের শিকার হল বাংলা। আসন্ন সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ থেকে বাতিল করা হয়েছে বাংলার ট্যাবলোকে। যা আট বছরে তৃতীয়বার। বিশ্বজয়ী কন্যাশ্রী প্রকল্পকে এবার স্থান দেওয়া হয়েছিল বাংলার ট্যাবলোয়। কিন্তু, তা খারিজ করে দিয়েছে মোদী সরকার। অথচ ২৬ই জানুয়ারি, সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে নারীশক্তির জয়জয়কার। ১৬ রাজ্য ও ১০ মন্ত্রকের ট্যাবলোর যাবতীয় শিল্পীই এবার মহিলা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র মনোজ রুরকিওয়াল সোমবার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “তিন বছর অন্তর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাজ্যগুলিকে সুযোগ দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। সেই নতুন নিয়মের গেরোয় বাদ পড়েছে একাধিক রাজ্য।” তাঁর কাছে পাল্টা জানতে চাওয়া হয়, যদি এমন নিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে গোড়াতেই বাংলা, পাঞ্জাব বা দিল্লির মতো রাজ্যকে কেন ডাকা হয়েছিল? তাছাড়া গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো রাজ্য তো গতবারও ছিল। তাহলে তারা এবারও কীসের ভিত্তিতে সুযোগ পেল? প্রশ্ন শুনে চুপ করে যান রুরকিওয়াল। মৃদু হাসলেও কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
প্রসঙ্গত, সাধারণতন্ত্র দিবসে এবারের থিম দু’টি। ‘বিকশিত ভারত’ ও ‘ইন্ডিয়া: মাদার অব ডেমোক্রেসি’। সেই থিমকে মাথায় রেখেই ছত্তিশগড় তুলে ধরছে ‘গণতন্ত্রের বিবর্তন’। বস্তারের মুরিয়া দরবারের ‘আদিম জনসংসদ’ পরিবেশন করবেন রাজ্যের মেয়েরা। প্রায় ৬০০ বছরের পুরনো ব্যবস্থাকে ট্যাবলোর মধ্যে দিয়ে পরিচয় করানো হবে দিল্লির বুকে। মহিলা নিয়ন্ত্রিত আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতীকী মূর্তি রয়েছে ট্যাবলোর সামনে। আর শেষে বড়ে ডোঙ্গারের লিমাউ রাজার প্রাসাদের প্রতিরূপ। বাংলার পাশাপাশি কেন্দ্রের কুচকাওয়াজের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিহার, দিল্লী, পঞ্জাব, কেরালার মতো বিরোধী রাজ্যগুলির ট্যাবলোও। প্রথম তিনটি রাউন্ডের পর পঞ্জাবের ট্যাবলোকে বেছে নেওয়া হলেও এরপর তা খারিজ করে দেয় এক্সপার্ট কমিটি। সংস্কৃতি, চিত্রকলা, অঙ্কন, গান, ভাস্কর্য, নৃত্যকলা সহ একাধিক বিষয়ে পারদর্শী বিশিষ্টদের নিয়ে তৈরি এই এক্সপার্ট প্যানেল বাতিল করে দেয় পঞ্জাব, বাংলার ট্যাবলোগুলি। সরব হয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। “কেন্দ্রীয় সরকারের মনে বিষ রয়েছে। তাই অবিজেপি রাজ্যগুলির ট্যাবলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে”, অভিযোগ তাঁর।