চিকিৎসাক্ষেত্রে ফের অনন্য নজির গড়ল এসএসকেএম হাসপাতাল। রক্তের গ্রুপ না মিললেও সফলভাবে সম্পন্ন হল কিডনি প্রতিস্থাপন। ২রা জানুয়ারি স্ত্রীকে কিডনি দান করেছেন স্বামী। শুক্রবার স্বামীর সঙ্গেই বাড়ি ফিরেছেন সেই গৃহবধূ। ঘটনার সাক্ষী রইলেন এসএসকেএমের নেফ্রোলজি-ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা। নিয়ম অনুযায়ী কিডনি প্রতিস্থাপনের আগে দাতা-গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ এক থাকতে হয়। এটাই দস্তুর। নয়তো নতুন শরীরে কিডনি কাজই করতে পারে না। প্রতিস্থাপনের পর রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। কিন্তু ২ জানুয়ারি বর্ধমানের ওই গৃহবধূর ‘এ-পজিটিভ’ ব্লাড গ্রুপের। উলটো দিকে দাতা স্বামীর ‘বি-পজিটিভ’ ব্লাড গ্রুপের। এমন অসম রক্তের গ্রুপের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিয়ে ‘এবিও ইনকম্পিটেবল’ পদ্ধতিতে গ্রহীতার রক্তের অ্যান্টিবডি কতটা সহ্য করতে পারবে, তা দিনের পর দিন পরীক্ষা করে দেখতে হয়। ডায়ালিসিস নিতে হয়েছে টানা চার বছর ধরে।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি হাসপাতালে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতে গেলে বাড়ি বিক্রি করতে হত। স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে তেমনটাও ভেবেছিলেন স্বামী। কিন্তু রাজ্যের মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগ এই কাজটাই করেছে টানা দু’মাস ধরে। পুরোটাই নিখরচায় হয়েছে। একটা সময় টাইটার ভ্যালুর অনুপাত ১:১৬-তে আনা হয়। ডা.অধ্যাপক অতনু পালের কথায়, “বেসরকারি হাসপাতালে উন্নত মানের যন্ত্র আছে। উন্নত মানের পরীক্ষা-ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব। তবে সেই বিদ্যা সরকারি হাসপাতালের সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে করা হয়েছে। এই কৃতিত্ব গোটা হাসপাতালের।” এসএসকেএম সূত্রে খবর, নেফ্রোলজি-ইউরোলজি, কার্ডিও ভাসকুলার বিভাগের একজন করে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন নেফ্রোলজি বিভাগের ৩০ জন পিজিটি তরুণ চিকিৎসক। কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে উডবার্ন ব্লকে। তবে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেও আপাতত শহরেই থাকতে হবে উক্ত মহিলাকে। হাসপাতালে এসে মাঝেমধ্যে করাতে হবে চেক আপ।