আর গোপনে নয়, এবার প্রকাশ্যেই দল ভাঙানোর খেলায় নেমে পড়তে চলেছে বিজেপি। অবিজেপি রাজ্যগুলিতে অন্য দল ভাঙিয়ে নিজেদের সরকার গঠনের চেষ্টা তো আছেই, এবার তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে লোকসভা ভোটের আগে সংগঠিতভাবে দল ভাঙানোর খেলা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি বাড়ানোর কথা বলে কংগ্রেস সহ বিরোধীদলের নেতা, সাংসদ ভাঙাতে কমিটি গঠন করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, পার্টির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষকে নিয়ে যোগদান কমিটি নামে একটি উচ্চ-স্তরের প্যানেল গঠন করেছে নরেন্দ্র মোদির দল। বোঝাই যাচ্ছে, এবারও ভোটের আগে সব রাজ্যে অন্য দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মী ভাঙিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করবে গেরুয়া শিবির।
প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচনে নিজেদের জয় নিয়ে নিঃসন্দেহ হলে এমন কাণ্ড করতে হচ্ছে কেন বিজেপিকে? পাশাপাশি নৈতিকতার নিরিখেও চরম অগণতান্ত্রিক কাজ এই দল ভাঙানোর খেলা। বস্তুত ২০১৪ সালে মোদি জমানা শুরু হওয়ার পর থেকেই দল ভাঙানো ও সরকার ভাঙানোকে কার্যত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে মোদি-শাহের দল। আর দল ভাঙানোর কাজ মসৃণ করতে একদিকে আর্থিক ও পদের প্রলোভন এবং অন্যদিকে সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ময়দানে নামিয়ে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে এবং বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে।
দল ভাঙানোর জন্য তৈরি হওয়া কমিটির কাজ কী? বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কমিটি দলবদলুদের স্ক্রিনিং করবে এবং গেরুয়া শিবিরে অন্তর্ভুক্তির পদ্ধতি ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করে সিদ্ধান্ত নেবে। যোগদান শিবিরের নামে দলের সশক্তিকরণের কথা বলা হলেও মূল লক্ষ্য হতে চলেছে অন্য দল ভাঙানো। ভয় আর প্রলোভনই এক্ষেত্রে বিজেপির হাতিয়ার। পাশাপাশি বিরোধীদের আরও দুর্বল করতে এই উদ্যোগ। বিজেপির এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, নির্বাচনী লড়াই এবং আদর্শগতভাবে দুর্বল এমন এলাকায় নিজেদের দলকে শক্তিশালী করতে দলবদলুদের স্বাগত জানানো ছাড়া গতি নেই বলে মনে করছে বিজেপি। যাঁরা বিজেপির রণনীতি তৈরি করছেন তাঁরা মনে করছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ধরনের যোগদান কর্মসূচি গেরুয়া শিবিরের পক্ষে ব্যাপক হাওয়া তৈরির সহায়ক হবে। জনমতকে প্রভাবিত করে ভোটের পরিবেশকে দলের পক্ষে নিয়ে আসবে।