লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আরও একবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পথ অবলম্বন করতে চলেছে মোদী সরকার? ইঙ্গিত মিলেছে তেমনই। প্রসঙ্গত, ভোটের আবহে দেশ এখন দু’ভাগে বিভক্ত। একদল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে অর্থাৎ বিজেপির বিরুদ্ধে। আর অন্য শিবিরটি বিজেপির পক্ষে। কিন্তু এছাড়া কিছু কিছু দল রয়েছে যারা কোনও শিবিরের নয়, কিন্তু মোদীর বন্ধু বলেই পরিচিত। সংসদে বা সংসদের বাইরে মোদী সরকারের যেকোনও সিদ্ধান্ত তারা সমর্থন করে। জরুরি সময় তারা মোদী সরকারের পাশে থাকে, ভোট দিয়ে বিলও পাশ করায়। মোদীর এই বন্ধুদের তালিকায় রয়েছে বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং বহুজন সমাজ পার্টির। বিজেডির নবীন পট্টনায়েকের বিজেপি-প্রীতি তাঁকে মোদীর বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। তাই দল ভাঙানো চলে না উড়িষ্যায়। তবে এবার কি বদলাচ্ছে পরিস্থিতি? বন্ধুত্বে ফাটল ধরছে? বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’-ঐর কাঁটা বিদ্ধ হতে চলেছে নবীনের রাজ্য, উড়িষ্যার বিজু জনতা দলের অন্দরে খরব এমনটাই।
উল্লেখ্য, বর্তমানে কোনও রাজ্যেই বিজেপির খুব একটা বড় শরিক নেই। যে রাজ্যগুলিতে বিজেপি দুর্বল, সেখানে কংগ্রেস, নাহলে আঞ্চলিক দলগুলি জিতছে। ভোটের আগে আরও সাবধানী বিজেপি। ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টার ত্রুটি রাখতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। প্রাথমিক জল্পনা ছিল, বিজু জনতা দলের সঙ্গে জোট করে লোকসভা ও বিধানসভায় লড়বে বিজেপি। তবে হঠাৎই বিজেপি জানিয়েছে, জোটের কোনও সম্ভাবনা নেই। শুরু হয়ে গিয়েছে অপারেশন লোটাস। বিজেডির এমপি-বিধায়কদের টার্গেট করা হচ্ছে। জোর চর্চা চলছে, কটকের এমপি ভর্তৃহরি মহতাবের সঙ্গে নাকি বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় এক নেতার বৈঠক হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে কটক থেকে প্রার্থী করার জল্পনা জোরদার হওয়ার পরই মহতাবের বিজেপি-যোগ নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে। শোনা যাচ্ছে, অন্তত তিনজন বিজেডি এমপির সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে বিজেপি। বিজু জনতা দলের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনও বাড়ছে দিনে দিনে। উত্তরাধিকারী হিসেবে হঠাৎ এক আমলাকে বাছাই করেছেন নবীন পট্টনায়েক। তাতেই নাকি অসন্তোষের আগুনে ঘৃতাহুতি। আইএএস অফিসার ভি কে পান্ডিয়ান যোগ দিয়েছেন দলে, দলের অন্দরের জল্পনা। আগামী দিনে তিনিই দল চালাবেন। নবীনের এহেন সিদ্ধান্তে, তাঁর দলের সিনিয়র নেতা, এমপি, বিধায়কদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে ছাড়ছে না বিজেপি। সম্প্রতি বিজেপি শীর্ষ সাংগঠনিক বৈঠক হয়েছে ওড়িশায়। দিল্লীর নেতারাও হাজির ছিলেন সেখানে। সূত্রের খবর, সেখানে ১১টি আসনকে পাখির চোখ করেছে গেরুয়াশিবির।