গত বছর থেকেই জাতি হিংসার আগুনে জ্বলছে উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্য মণিপুর। ইতিমধ্যেই কুকি আর মেইতেইদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ঘটেছে গণধর্ষণ, জীবন্ত পুড়িয়ে মারার মতো ঘটনাও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যতই দাবি করুক না কেন সেখানে শান্তি ফিরেছে, বাস্তব বলছে এখনও অগ্নিগর্ভ মণিপুর। এই আবহে মেইতেইদের মন ছুঁয়ে কুকিদের কাছে টানার চেষ্টা চালালেন রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় ছাত্র, যুব, মজদুর, সাধারণ মানুষ, মহিলাদের সঙ্গে সাক্ষাতে রাহুল জেনে নিচ্ছেন মণিপুরের মন কি বাত।
সোমবার ছিল ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার দ্বিতীয় দিন। রবিবার সেকমাইতে কন্টেনারে রাত কাটিয়ে সোমবার রাহুল থাকছেন সেনাপতি জেলার খুজামা গির্জার সামনের মাঠে। সেখানে পৌঁছনোর আগে সেনাপতির ফুটবল মাঠে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের তোপ, অশান্ত মণিপুরকে শান্ত করার কোনও চেষ্টা করেননি মোদী। এমনকী দলের রাজ্যসভার সদস্য মণিপুরের মহারাজা লেইসেম্বা সানাজাওবা হোক বা বিদেশ রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজকুমার রঞ্জন সিং, কাউকেই সাক্ষাতের সময় দেননি। অথচ মণিপুর অশান্ত হতে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করে ২০২৩ সালের ২০ মে খোদ নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজকুমার রঞ্জন সিং। ততদিনে মেইতেই-কুকির লড়াইয়ে মারা গিয়েছেন ৭১ জন। এখন যার সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০০।
জয়রাম বলেন, মোদীজি মণিপুরকে মারতে চান। আর রাহুল গান্ধীর লক্ষ্য শান্তি ফেরানো। এখানে এখনও এমন অবস্থা যে রাজ্যে বিজেপির বীরেন সিং সরকারে দুই মন্ত্রী দপ্তরেই যান না। অনলাইনে কাজ চালাচ্ছেন। তাঁরা আদৌ মণিপুরে আছেন, নাকি এলাকা ছেড়েছেন, কেউ জানে না। এদিকে, সেনাপতির মোড়ে যাত্রা বাসের মাথায় উঠে রাহুল গান্ধী সকলকে আশ্বাস দেন। বাস থেকে নেমে ছবিও তোলেন। এক পলক তাঁকে দেখতে সেকমাই থেকে খুজমার— প্রায় প্রতিটি মোড়, বাজারে চোখে পড়ল কৌতুহলী পাহাড়িদের অপেক্ষা। কুকি কলেজ পড়ুয়ারা রাহুলের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন, ‘ইম্ফলে পড়তে যেতে পারছি না। পালিয়ে আসতে হয়েছে। সরকারকে বলে ব্যবস্থা করে দিন।’ মহিলাদের মাথাব্যথা চিকিৎসা। পাহাড়ে তেমন হাসপাতাল নেই। অথচ উপত্যকা ইম্ফলেও যেতে পারছেন না। সমস্যা মেটাও বেটা। রাহুলকে কাছের করতে কুকিরাও বাড়িয়েছেন হাত।