ইতিহাস তৈরির পথে শহর কলকাতা। তিলোত্তমার পাতাল পথে যাত্রী নিয়ে ছুটেছিল দেশের প্রথম মেট্রো রেল। এবার চালকবিহীন মেট্রো চালিয়ে ফের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে চলেছে কলকাতা। এই মুহূর্তে দিল্লীর পিঙ্ক এবং ম্যাজেন্টা লাইনে চালকবিহীন মেট্রো পরিষেবা রয়েছে। তারপরই দেশের দ্বিতীয় হিসেবে জায়গা করে নিতে চলেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রুট। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব শীঘ্রই শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত চালু রুটে মানববিহীন মেট্রো রেকের বাণিজ্যিক দৌড় শুরু হবে। আগামী দিনে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ গোটা পথেই চলাচল করবে বিনা চালকের মেট্রো। সূত্রের দাবি, এই পথে ইতিমধ্যেই চালকহীন মেট্রো রেকের সফল ট্রায়াল রান পর্ব শেষ হয়েছে। আজ, শুক্রবার কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি প্রযুক্তি নির্ভর এই মেট্রো চলাচল ব্যবস্থা শুরুর দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারেন। মেট্রোর এক শীর্ষ কর্তার কথায়, অটোম্যাটিক ট্রেন অপারেশন (এটিও) প্রযুক্তির সাহায্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। এক্ষেত্রে কোনও মোটরম্যান কিংবা চালক ছাড়াই এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটবে মেট্রোরেল।
পাশাপাশি, ভবিষ্যতে নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট এবং জোকা মেট্রো রুটেও চালকবিহীন পরিষেবা চালু হবে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সার্বিকভাবেই সমকালীন উন্নয়ন পরিকাঠামো ও প্রযুক্তির মিশেলে গড়ে উঠেছে। গোটা রুটের সিগন্যাল ব্যবস্থা পরিচালিত হয় কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোলের (সিবিটিসি) মাধ্যমে। সেই কারণেই ৯০ সেকেন্ড অন্তর মেট্রো চালাতে সক্ষম এই রুটটি। একমাত্র এই উন্নত সিগন্যালিং ব্যবস্থায় এটিও প্রযুক্তিতে মেট্রো চালানো সম্ভব। সেই সূত্র ধরেই যাত্রী ছাড়া বিনা চালকের রেক চালিয়ে সাফল্যের সঙ্গে মহড়া সম্পূর্ণ হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত এক মেট্রো কর্তার কথায়, কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর রুটে চালকের ভুলে অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার সাক্ষী হয়েছেন যাত্রীরা। বহু সময় হিউম্যান এরর হয়। মুহূর্তের ভুলে চালক ডাকদিকের বদলে বাঁদিকের বোতামে হাত দিয়ে দেন। আচমকাই প্ল্যাটফর্মের উল্টোদিকে মেট্রোর দরজা খুলে যায়। অনেক সময় চালকের মনের ভুলে দরজা খোলা রেখেই মেট্রো এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে পৌঁছে যায়। সব ক্ষেত্রেই যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। প্রভাব পড়ে মেট্রো পরিষেবায়। কিন্তু চালকবিহীন রেকগুলি যন্ত্রের সাহায্যে পরিচালিত হবে। প্রযুক্তির গুণে এড়ানো যাবে হিউম্যান এরর। ফলত প্রায় নেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা।