গোটা দেশজুড়ে জিএসটি ফাঁকি চলছে। আর তা রুখতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে চিঠি লিখে এমনই পরামর্শ দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান মুখ্য অর্থ উপদেষ্টা অমিত মিত্র। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, এই সমস্যার সমাধান খোঁজার জন্য অবিলম্বে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকার প্রয়োজন। কর ফাঁকি রুখতে পারলে লক্ষ কোটি টাকার সাশ্রয় হবে বলে চিঠিতে জানিয়েছেন অমিত মিত্র। এই অর্থ আদায় হলে রাজ্যগুলি আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও অমিতবাবু জিএসটি ফাঁকি রুখতে অনেকবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রতি মাসে ১.৬ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায়কে এই পরোক্ষ কর ব্যবস্থার সাফল্য হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু বিপুল পরিমাণে জিএসটি ফাঁকির যে তথ্য উঠে আসছে, তা আদতে সেই সাফল্যের সামনেই প্রশ্নচিহ্ন দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এই কারণেই দ্রুত কর ফাঁকি রোখার উপায় খোঁজা দরকার। তা করতে পারলে লক্ষাধিক কোটি টাকার সাশ্রয় হবে এবং তা রাজ্যগুলির কাজে আসবে।
সোমবারের চিঠিতে বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে অমিত মিত্রের দাবি, জিএসটি চালুর সাড়ে ছ’বছর পরেও কর ফাঁকি ঠেকানো যায়নি। বরং তা লাফিয়ে বাড়ছে। তিনি লিখেছেন, গত ৭ জানুয়ারি কেন্দ্র দাবি করেছে ২৯,২৭৩টি ভুয়ো সংস্থা বাতিল করা হয়েছে। যারা ভুয়ো বিল দেখিয়ে বা নথিভুক্তির মাধ্যমে আগে মেটানো কর ফেরত পেতে প্রায় ৪৪,০১৫ কোটি টাকা দাবি করেছে। গত বছর ৩১ জুলাই লোকসভায় খোদ নির্মলাই জানিয়েছিলেন, ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৪৩,৫১৬টি ঘটনায় জিএসটি ফাঁকির অঙ্ক প্রায় ২,৬৮,৫৩৭ কোটি টাকা।
ইনফোসিস কর্তা নন্দন নিলেকানিও জিএসটি পরিষদের বৈঠকে বলেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪২,৬১৮টি ঘটনায় মোট ৭০,০০০ কোটি কর ফাঁকির মধ্যে আইটিসি-ই ছিল ৩৮,৭৭১ কোটির। এই পরিমাণ আর্থিক লোকসানকে ভারতের পক্ষে বিপজ্জনক আখ্যা দিয়ে অমিতবাবুর দাবি, সমস্যার শিকড় অনেক গভীরে পৌঁছেছে। এটা কোনও একটি রাজ্যের সমস্যা নয়। বরং সারা দেশকেই এর ফল ভুগতে হচ্ছে। লুঠ হচ্ছে মানুষের অর্থ। তাঁর বক্তব্য, নতুন এই পরোক্ষ কর ব্যবস্থা চালুর পরে রাজ্যগুলি কর আদায় তথা রাজস্বের জন্য কেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত সময় বেঁধে কর ফাঁকির সমস্যার সমাধান জরুরি।