সংসদে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা-সহ তিনটি বিল পাশের সময় লোকসভা ও রাজ্যসভার ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর প্রথমে লোকসভায়, তার পরে রাজ্যসভায় বিনা বিতর্কে বিল পাশ হয়ে যায়। ২৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি সইও করে দেন। যেখানে কোনও আইন তৈরির আগে প্রথমে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনা হয়। তার পরে বিলের খসড়া তৈরি হয়। তারও পরে সেই বিল সংসদে পেশ হলে তা নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটি বিল নিয়ে সব মহলের বক্তব্য শুনে সংসদে রিপোর্ট পেশ করে। সংসদে আলোচনার পরে বিল পাশ করে আইন তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, মোদী জমানায় আইন তৈরির এই স্বাভাবিক নিয়ম বা প্রথা মানা হচ্ছে না বলে বিরোধীরা বহু দিন ধরেই অভিযোগ তুলছেন। তবে ট্রাক চালকদের ধর্মঘটের পরে সংসদে সদ্য পাশ হওয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পিছু হটায় মোদী সরকারের আইন তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধীরা নতুন করে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেয়ে গেলেন। তাদের বক্তব্য, আগে আলোচনা করে তার পরে আইন তৈরির কথা। আইন তৈরির পরে আলোচনা করার কথা নয়। এ তো পুরো উল্টো নিয়ম। বিরোধীদের প্রশ্ন, মোদী সরকার কি এখন আইন সংশোধন করবে? না কি আইন জারির বিজ্ঞপ্তিতে ওই ধারাটি থাকবে না? এর পরে অন্য মহল থেকে আইনের অন্য কোনও ধারা নিয়ে আপত্তি উঠলে তখন কী হবে?
প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধি বদলিয়ে তৈরি ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ধাক্কা মেরে পালানো বা ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর অপরাধে গাড়িচালকদের ১০ বছর জেল ও ৭ লক্ষ টাকা জরিমানার শাস্তি বিধানের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। অর্থনীতিতে অচলাবস্থা তৈরির ভয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা করে, নতুন আইনের ওই ধারা এখনও কার্যকর হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনার পরেই ধারাটি কার্যকর করা হবে। এ নিয়ে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘আইনের উদ্দেশ্য জনগণের জীবন সহজ করা, সুরক্ষিত করা ও ন্যায়ের ব্যবস্থা করা। লক্ষ লক্ষ চালকের উপরে অত্যাচার চালানো, ঘুষ আদায়, বন্দি করে রাখা ও আর্থিক ভাবে দেউলিয়া করে দেওয়া নয়। বিনা আলোচনায়, বিরোধীদের বাদ দিয়ে একতরফা তুঘলকি আইন তৈরি এবার বন্ধ হওয়া উচিত।’