এবার ভারতীয় ফুটবল দলের সদস্যদের মাঠে নেমে পরামর্শ দিলেন সার্বিয়ার কিংবদন্তি কোচ বোরা মিলুতিনোভিচ। উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে মেক্সিকো, ১৯৯০ সালো কোস্টা রিকা, ১৯৯৪ সালে আমেরিকা, ১৯৯৮ সালে নাইজিরিয়া এবং ২০০২ সালে চীনের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে বোরা বিশ্বফুটবলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্তিমাচের অনুরোধে তিনি চলে আসেন ভারতীয় দলের অনুশীলন দেখতে। সুনীলদের প্রস্তুতির আগে দীর্ঘ সময় বোরা কথা বলেন ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে। দিয়েছেন মূল্যবান পরামর্শ। তাঁর উপস্থিতি রাতারাতি চাঙ্গা করে দিয়েছে ভারতীয় শিবিরকে। পরে বল নিয়ে নিজে মাঠেও নেমে পড়েন ৭৯ বছরের মিলুতিনোভিচ ‘‘ওঁকে চোখে সামনে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বোরার মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে দেখা হওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার, নিজেকে ভাগ্যবান বলেই মনে করি। এমন কিছু পরামর্শ পেয়েছি, যা কোনওদিন ভুলতে পারব না’’, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন ভারতীয় দলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু।
পাশাপাশি, গুরপ্রীত আরও বলেছেন, ‘‘বোরা শুরুতেই আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটা কি।’’ আরও যোগ করেন, ‘‘আমাদের দিকে সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বোরা নিজেই তার উত্তর দিয়ে দেন। তিনি বলেন, পরের মুহূর্তটায় কী হবে, সেই সম্পর্কে ভাবন যেন তৈরি থাকে। যদি গোল করি, তা হলে সেটাকে ধরে রাখতে হবে। বিপক্ষে গোল হলে পরের মুহূর্তে পাল্টা আক্রমণ করতে হবে। ওঁর মুখ থেকে এমন পরামর্শ শোনা নিঃসন্দেহে সেরা একটা প্রাপ্তি।’’ ভারতীয় দলের ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গন জানিয়েছেন, প্রবাদপ্রতিম কোচের বিনয় এবং প্রত্যেকের প্রতি স্নেহশীল মনোভাব তাঁকে মোহিত করে দিয়েছে। সন্দেশ বলেছেন, ‘‘প্রথমেই এসে জানিয়ে দিলেন তাঁর ইংরাজি নাকি তেমন ভাল নয়। তার পরে পুরো সময়টা আমাদের সঙ্গে কথা বলে গেলেন বিশুদ্ধ ইংরাজিতে।কথাবার্তার ফাঁকে বোরা এমন কিছু শব্দ এবং প্রবাদ ব্যবহার করেছেন, যা শুনে আমি খুবই প্রভাবিত হয়েছি। তিনি আমাদের সকলকে বুঝিয়েছেন স্বপ্ন দেখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং তাকে বাস্তবায়িত করা আরও কতটা প্রয়োজনীয়।’’ এখানেই থেমে থাকেননি সন্দেশ। ‘‘সেই সময় অনুশীলনের ব্যস্ততা থাকায় তাঁর মন্তব্যগুলোকে তেমন মন দিয়ে শুনতে পারিনি। হোটেলে ফেরার পরে নতুন ভাবে তাঁর পরামর্শগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করতে শুরু করি। তখনই নতুন ভাবে অনুভব করতে শুরু করি, বোরার পরামর্শের অন্তর্নিহিত অর্থটা কী। ওঁকে পেয়ে আমরা অভিভূত’’, বক্তব্য সন্দেশের।