সোমবার ছিল ১ জানুয়ারি। আর প্রতিবারের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ছিল ভক্তদের মহা সমাগম। কিন্তু বড়সড় অদল-বদল ঘটে গিয়েছে ড্রেস কোডের ক্ষেত্রে। আগেই প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ঘোষিত ড্রেস কোড মেনে চললে তবেই দর্শনের সুযোগ মিলেছে পুণ্যার্থীদের। কোনও ভক্তকেই পান-গুটখা মুখে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ছেঁড়া জিন্স, হাতাকাটা জামা, স্কার্ট অথবা হাফ প্যান্টের মতো ‘অশালীন’ পোশাক পরিহিত কোনও ভক্তকেই জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। শরীরের সমস্ত অংশ ঢাকা পোশাক পরলে তবেই একমাত্র মন্দিরে ঢোকার সুযোগ মিলেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২০ অক্টোবর শ্রীজগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পক্ষ থেকে ড্রেস কোড নিয়ে একটি বিশেষ গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। তাতে বলে দেওয়া হয়, মন্দিরে ছেঁড়া জিনস, হাতাকাটা জামা অথবা হাফ প্যান্ট বরদাস্ত করা হবে না। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে, এমন পোশাক পরাও নিষিদ্ধ হবে পুরীর মন্দিরে। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘মন্দিরের পবিত্রতা বজায় রাখা আমাদের কর্তব্য। আজকাল অনেকেই মন্দিরে আসছেন ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা না ভেবেই। হাফ প্যান্ট, হাতাকাটা জামা পরে অনেককে মন্দিরে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। যেন তাঁরা সমুদ্রের ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মন্দির দেবস্থান, কোনও বিনোদনের জায়গা নয়।’
নিজেদের প্রকাশ করা নির্দেশিকার নিয়ম বছরের প্রথম দিন থেকেই অত্যন্ত কড়া হাতে বজায় রাখতে দেখা গিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষকে। পোশাকের নিয়ম মানা হয়েছে কড়া হাতে। মহিলা পুণ্যার্থীদের ক্ষেত্রে একমাত্র শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ফুল প্যান্ট, শার্ট কিংবা কুর্তা-পাজামার মতো পোশাক আদর্শ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গর্ভগৃহে প্রবেশের আগে লাইনেই পোশাকবিধি খতিয়ে দেখা হয়েছে। এর জন্য পুরীর মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে মোতায়েন করা হয়েছে প্রতিহারী সেবায়েতদের। উল্লেখ্য, উত্তর এবং দক্ষিণ ভারতের একাধিক হিন্দু মন্দিরে গত কয়েক মাসে ধর্মীয় ভাবাবেগ এবং মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষায় জোর দিয়ে ছোট পোশাক পরতে নিষেধ করা হয়েছে। পুরীর মন্দিরও সেই পথে চলতে শুরু করল নতুন বছরের সঙ্গে সঙ্গে।