এবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, একদা, আউশগ্রামের হেদোগড়িয়া সংলগ্ন একটি এলাকায় পরীক্ষামুলকভাবে ছাড়া হয়েছিল কয়েকটি ময়ূর। এখন সেখানে ময়ূরের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০০টিরও বেশি। অর্থাৎ, ওই অঞ্চল এখন ময়ূরের অবাধ বিচরণকভূমি হয়ে উঠেছে। তা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন আউশগ্রামের এই এলাকায়। যার ফলে ধীরে ধীরে পর্যটনের মানচিত্রে জায়গা করে নিচ্ছে এলাকাটি। এই অবস্থায় আউশগ্রামে ইকো ট্যুরিজম গড়ার চিন্তাভাবনা করছে জেলা প্রশাসন। জানা যাচ্ছে, বর্তমানে এখানে ময়ূর দেখতে পর্যটকদের ভালোই ভিড় হচ্ছে। বিশেষ করে শীতের সময় সেখানে পর্যটকদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। যার ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ছবিও পালটে যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, আগে হেদোগড়িয়া গ্রাম লগোয়া জঙ্গলে ময়ূর দেখতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হত মানুষকে। এখন মাঝেমধ্যেই দল বেঁধে ময়ূর চলে আসে লোকালয়ে। তা দেখতে এখানে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন।
পাশাপাশি, বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে কাঁকসার দেউল এলাকায় কয়েকটি ময়ূর ছাড়া হয়েছিল পরীক্ষামূলকভাবে। এরপর সেগুলির বংশবিস্তার ঘটে। বর্তমানে আশেপাশের জঙ্গলেও ছড়িয়ে পড়েছে ময়ূর। বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেউল ও আদুরিয়া জঙ্গলকে কেন্দ্র করে ৩০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এখন ময়ূর রয়েছে। সব মিলিয়ে সেখানে প্রায় ৫০০ টি ময়ূর রয়েছে। এখন এই এলাকা ময়ূরের অবাধ বিচারণক্ষেত্র পরিণত হয়েছে। আর স্থানীয়দের সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে বলে জানাচ্ছে বন বিভাগ। হেদোগরিয়া ছাড়াও রাঙাখুলা,প্রেমগঞ্জ প্রভৃতি এলাকায়ও ময়ূর দেখা যাচ্ছে। আর তাতেই ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। এই অবস্থায় সেখানে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলার দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বনদফতর এবং পর্যটন বিভাগ আলোচনা করেছে বলে জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার। স্থানীয়দের বক্তব্য, বর্তমানে সেখানে এক একটি দলে ৩০ থেকে ৪০টি ময়ূর দেখা যাচ্ছে। আগে ময়ূরগুলি লুকিয়ে বেড়াতো। তবে এখন তারা অভয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে। মানুষের সঙ্গে তারা সহ অবস্থান শিখেছে। ফলে অনায়াসে বনবিভাগ তাদের ওপর নজরদারি চালাতে পারছে।বর্ধমানের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, বর্তমানে ময়ূরের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি গণনা সম্ভব হয়নি। ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিশা গোস্বামী।