আরও একবার প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক তথ্য। যার জেরে প্রবল বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার ২০ শতাংশ অ্যাকাউন্টই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে! সংসদে এমনই তথ্য পেশ করেছেন মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য ভাগবত কে কারাদ। শুধু তাই নয়, নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের মধ্য়ে মহিলাদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার জন ধন যোজনা নিয়ে রাজ্যসভার লিখিত জবাব দেন অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কারাদ। কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত জন ধন যোজনার মোট ১০.৩৪ কোটি অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। যাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৪.৯৩ কোটি বলে জানিয়েছে সরকার। রাজ্যসভায় এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “জন ধন যোজনা নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে এর সংখ্যা ৫১.১১ কোটি। যার মধ্যে ২০ শতাংশ অ্যাকাউন্টে কোনও লেনদেন করা হচ্ছে না। পাশাপাশি, নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টে জমা থাকা টাকার পরিমাণের কথাও জানিয়েছেন কারাদ। তাঁর কথায়, এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ১২, ৭৭৯ কোটি টাকা জমা রয়েছে। যা জন ধন যোজনায় সামগ্রিক জমা হওয়া টাকার মাত্র ৬.১২ শতাংশ। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টের সমপরিমাণ লেনদেন বিহীন অ্যাকাউন্ট রয়েছে জন ধন যোজনায়, এমনই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
রাজ্যসভায় কারাদ জানান, “জন ধন যোজনার নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা থাকায় তার উপরে সুদ জমা হচ্ছে। গ্রাহকরা যে কোনও দিন ওই টাকা তুলতে পারবেন। অ্যাকাউন্টটি ফের সক্রিয় হয়ে উঠলেই সেটা করা যাবে।” অর্থ মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ব্য়াঙ্কের তরফে নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যার উপর লাগাতার নজর রেখে চলেছে সরকার। অ্যাকাউন্টের লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করছে ব্যাঙ্ক। উল্লেখ্য, ২০১৭-এর মার্চে নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কমেছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। চলতি বছরের নভেম্বরে যা আরও কমে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই-অঃর গাইডলাইন অনুযায়ী, যদিও কোনও গ্রাহক য়দি দু’বছরের বেশি সময় ধরে লেনদেন না করেন, তবে তাঁর অ্যাকাউন্টকে নিষ্ক্রিয় বলে ঘোষণা করে ব্যাঙ্ক। অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিক অর্থ প্রদান পরিষেবার (ইমিডিয়েট পেমেন্ট সার্ভিস) মাধ্যমে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে ৮২০ কোটি টাকা দিয়েছে ইউকো ব্যাঙ্ক। আরবিআই-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ২৮,৮৯১টি অ্যাকাউন্ট থেকে ৭০৫.৩১ কোটি টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে।