এককথায়, জিতেও স্বস্তি নেই বিজেপির। সম্প্রতিই মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করেছে বিজেপি। কিন্তু নির্বাচনে ফল প্রকাশের পর পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও ওই তিন রাজ্য চালানোর দায়িত্ব কার হাতে ছাড়া হবে তা নিয়ে, সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে শীর্ষ নেতৃত্বের। গত তিন দিন ধরে দফায়-দফায় বৈঠক চলছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে কাকে বসানো হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি মোদী-শাহরা। বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক হয়েছে, তিন রাজ্যেই নবনির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলতে পাঠানো হবে পর্যবেক্ষকদের। তাঁরাই কথা বলে রিপোর্ট দেবেন। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রীদের বেছে নেওয়া হবে। বিজেপি সূত্রে খবর, তিন রাজ্যের মধ্যে বিধায়কদের সংখ্যার নিরিখে শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশেই দল স্বস্তিতে। কেননা, সরকার গঠনের জন্য ওই রাজ্যে মোট ১১৬ বিধায়কের সমর্থন দরকার। সদ্য সমাপ্ত ভোটে জিতেছেন ১৬৩ বিধায়ক। অর্থাৎ ৪৭ জন বিধায়ক অতিরিক্ত রয়েছেন। তাই দলের একাংশ বিদ্রোহ করলেও তেমন সমস্যার সৃষ্টি হবে না।
তবে অন্যদিকে ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে ততটা স্বস্তির অবকাশ নেই। কারণ, রাজস্থানে সরকার গঠনের জন্য দরকার ১০০ বিধায়কের। দলের বিধায়ক সংখ্যা ১১৫। তার মধ্যে ২৪ থেকে ২৫ জন বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার কট্টর সমর্থক। ঢোলপুরের মহারানিকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে না বসালে তাঁরা বিদ্রোহ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সরকারের স্থায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়বে। ছত্তিশগড়েও পরিস্থিতি একই। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রেণুকা সিংকে পছন্দ মোদী-শাহের। কিন্তু নিজের দাবি ছাড়তে নারাজ প্রাক্তন রমন সিং। ওই রাজ্যে দলের মোট বিধায়ক সংখ্যা ৫৪। সরকার গড়তে প্রয়োজন ৪৬ বিধায়কের। যদি ১০ বিধায়ক কোনও কারণে বিগড়ে যান, তাহলে রাজ্য হাতছাড়া হতে পারে। তাই হিসাব কষেই তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নিতে হচ্ছে। তবে তিন রাজ্যের সঙ্গে যে দুই রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয়েছিল, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা দূর হয়েছে। এদিনই তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের রেবন্থ রেড্ডি। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিচ্ছেন জোরাম পিপলস মুভমেন্টের লালডুয়োমা। ফলে তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করতে কার্যত ল্যাজেগোবরে অবস্থা হয়েছে পদ্মশিবিরের উপরমহলের।