যোগী আদিত্যনাথের আমলে শিকেয় উঠেছে উত্তর প্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা। কার্যত অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে যোগী রাজ্য। বারবারই এই অভিযোগ করে থাকে বিরোধীরা। এই অভিযোগ যে মোটেও ভ্রান্ত নয়, এবার ফের মিলল তার প্রমাণ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল অবধি সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। পিছিয়ে নেই বাকি বিজেপি ও এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলিও। যার ফলস্বরূপ কেবলমাত্র ২০২২ সালেই দেশে ২৮ হাজার ৫২২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এনসিআরবি তাদের ২০২২ সালের বার্ষিক রিপোর্ট সামনে এনেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে গত বছর সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ৫২২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিন গড়ে ৭৮টি খুনের ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৩টির বেশি হত্যাকাণ্ড হয় দেশে। খুনোখুনির কারণ হিসেবে এনসিআরবির রিপোর্ট বলছে, মহিলা ও শিশুদের ওপর যেমন অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে, তেমনই পণের জন্যও খুন বেড়েছে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া, পরকীয়ার ঘটনাও রয়েছে। প্রেম ঘটিত বিবাদের জন্য খুনের ঘটনা অনেক বেড়েছে। কারণ আরও আছে। জাতপাত নিয়ে বিরোধ, দলিতদের উপর নির্যাতন, রাজনৈতিক কারণে খুন, ধর্ষণের পরে খুন এবং আরও ভয়ের ব্যাপার হল নরবলি। চলতি বছরেও দক্ষিণ ভারতে এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এসে। কোনও উদ্দেশ্য পূরণের জন্য নরবলি দেওয়া হয়েছে। এমনকী শিশুরাও রেহাই পায়নি।
কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০২১ সালে ভারতে মোট ২৯ হাজার ২৭২টি খুনের ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ১৯৩। গত বছরের মোট অপরাধের মধ্যে রাজনৈতিক হিংসা ও বিরোধের জেরে খুন হয়েছিল ৯ হাজার ৯৬২। ব্যক্তিগত হিংসার জেরে খুন হয় ৩ হাজার ৭৬১ এবং প্রেম ঘটিত কারণে খুন হয়েছিল ১ হাজার ৮৮৪ জন। এখানেই শেষ নয়। রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে ভারতে মহিলাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছিল। গার্হস্থ্য হিংসার বলি হয়েছিলেন অনেকে। বিশেষ করে লকডাউনের সময় গার্হস্থ্য হিংসার কারণে খুনের ঘটনা বেড়েছিল। খুনের অপরাধে রাজ্যভিত্তিক একটি রিপোর্টও প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো। আর তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালে দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে যোগী রাজ্যে। সর্বাধিক ৩ হাজার ৪৯১ জন খুন হয়।