বিরোধীদের উদ্দেশে অশালীন বা বিতর্কিত মন্তব্য করাই হোক কিংবা হুমকি দেওয়া— সবেতেই গেরুয়া শিবিরের নেতা-নেত্রীদের জুড়ি মেলা ভার। আর সেই তালিকায় একেবারে ওপরের দিকেই নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের। গত মঙ্গলবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সলমন খান, অনিল কাপুরদের সঙ্গে নাচের ছন্দে পা মেলান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে অপমানজনক মন্তব্য করে ফের একবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন তিনি। যদিও তৃণমূলের প্রতিবাদের মুখে পড়ে বুধবার ডিগবাজি খেয়েছেন গিরিরাজ। তাঁর দাবি, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাচ সম্পর্কে ‘ঠুমকা’ শব্দের প্রয়োগ করেননি। অথচ বাংলায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর টুইটারে এখনও গিরিরাজের সেই মন্তব্যের ফুটেজ উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
তবে ঘটনা হল, গিরিরাজ মমতা সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা একেবারেই বিক্ষিপ্ত নয়। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের ঠিক এক বছরের মধ্যে বিহার বিধানসভার নির্বাচন হয়েছিল। সেই ভোটের আগে সোনিয়া গান্ধী সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ‘সোনিয়া গান্ধী ফর্সা ত্বকের কারণেই কংগ্রেস তাঁকে সভানেত্রী করেছিল। রাজীব গান্ধী যদি কোনও নাইজিরিয়ানকে বিয়ে করতেন তাহলে কি কংগ্রেস তাঁকে সভানেত্রী করত? আমার সন্দেহ আছে!’ এ হেন বর্ণবিদ্বেষী ও নারী বিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে দলের মধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন গিরিরাজ। আবার, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের সময়ে তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা মোদীর বিরোধিতা করছেন তাঁদের পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত।’ ওই ঘৃণাসূচক মন্তব্যের কারণে গিরিরাজের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে হয়েছিল গিরিরাজকে। মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে ‘ভারত মায়ের সুসন্তান’ বলা কিংবা বিরোধীদের ‘ওসামাবাদী’ বলে আক্রমণ করাও গিরিরাজের কাছে জলভাত।