মঙ্গলবার শুভ সূচনা ঘটল ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। উৎসব চলবে আগামী ১২ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। এদিন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সলমন খান, অনিল কাপুর, সোনাক্ষী সিনহা, শত্রুঘ্ন সিনহা, মহেশ ভাট-সহ অন্যান্য ব্যক্তিত্বরা। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে ‘মহানায়ক’কে সম্মান জানালেন ‘নায়ক’। উত্তমকুমার সম্পর্কে আপ্লুত বক্তব্য রাখলেন বলিউড অভিনেতা অনিল কাপুর। পাশাপাশি সত্যজিৎ রায় এবং কলকাতার মানুষদের সাংস্কৃতিক মননশীলতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেখাল তাঁকে। মনে করিয়ে দিলেন, এই কলকাতা থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর সিনে-যাত্রা। “কলকাতা আমার কাছে কেবল শহরমাত্র নয়। একটা আবেগময় অভিজ্ঞতা। একটা যাত্রা। এবং স্মৃতির এক ভাণ্ডার। যা আমার কেরিয়ার, আমার সিনেমার প্রতি ভালোবাসাকে তৈরি করতে সাহায্য করেছে। আমার ফিল্ম লাইফ শুরু হয় কলকাতায়। আজ থেকে ৪৩ বছর আগে ১৯৭৯ সালে আমি মুম্বই বিটি স্টেশন থেকে হাওড়া স্টেশন। তার পর বাসে চেপে বালিগঞ্জে একটা গেস্ট হাউসে উঠি। আমার প্রথম কাজ ছিল এম এস সত্তুর ‘কাঁহা কাঁহা সে গুজর গয়ে’। কলকাতাতেই এই ছবি হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ছবি প্রযোজনা করেছিল। আমার জানা নেই এই কলকাতা কানেকশন ছাড়া আমার ফিল্মি কেরিয়ার শুরু হত কিনা। ৪৫ দিন ধরে আমার বাড়ি ছিল বালিগঞ্জ গেস্ট হাউস। সেই সময় থেকে কলকাতা আমার হৃদয়ে”, জানান স্মৃতিমেদুর অনিল।
পাশাপাশি, বিনোদন জগতে বাঙালির সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদার, বিমল রায়, ঋতুপর্ণ ঘোষ, অশোক কুমার, কিশোর কুমার, ঋষিকেশ মুখার্জি, অপর্ণা সেন, শর্মিলা ঠাকুর, মিঠুন চক্রবর্তী, রাখি গুলজার, সুচিত্রা সেন, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রমুখদের নাম। সবশেষে তাঁর মুখে শোনা গেল মহানায়ক উত্তমকুমারের নাম। অনিল বলেন, ”উনি ছিলেন এক মহান মানুষ। একাই এক প্রতিষ্ঠান। আমি একটা ছবি করেছিলাম ‘নায়ক’। আপনারাই ছবিটিকে সুপারহিট করেছিলেন। সেই ছবিতে আমি ছিলাম নায়ক। পরে আমি জানতে পারি বাংলাতেও এই নামে ছবি রয়েছে। পরিচালক সত্যজিৎ রায়। একমেবদ্বিতীয়ম উত্তমকুমারই ছিলেন নায়কের চরিত্রে। পরে যখন বিস্তারিত জানলাম, আবিষ্কার করলাম উত্তমকুমারের একটা ট্রেন যাত্রার মধ্যে দিয়ে জীবনের যাত্রাকে। যা তাঁকে চিহ্নিত করেছিল মহানায়ক হিসেবে। ১৯৬৬ সালের ছবি। তবু ছবিটি আজও প্রাসঙ্গিক। আজ এই মঞ্চে একজন নায়ক তাঁর গভীরতম শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাচ্ছে বাংলা ছবির কিংবদন্তি এভারগ্রিন মহানায়ককে।” পাশাপাশি সত্যজিৎ রায়কে সর্বকালের অন্যতম সেরা পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করেন ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’।