আরও একবার অভিযোগের কেন্দ্রে বিশ্বভারতীর সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবার তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিদ্যুৎ পৌষমেলা বন্ধ করেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। সুভাষ দত্তের আর্জি, প্রান্তিক মানুষদের কথা ভেবে ঐতিহ্যবাহী শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার আয়োজন হোক পূর্বপল্লীর মাঠেই। শুক্রবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত নয়া উপাচার্যকে সশরীরে দফতরে গিয়ে চিঠি দেন তিনি। পাশাপাশি, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে মেলার আয়োজনে ১০ হাজার টাকা অনুদানও দেন। শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার পক্ষে সওয়াল করে বোলপুরের বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন,”পরিবেশ আদালত কোনদিনই বলেনি মেলা বন্ধ করতে। প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ ভুল ব্যাখ্যা করে মেলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি উপাচার্য থাকাকালীন ২০১৯ সালের শেষবার পূর্বপল্লির মাঠে হয়েছিল পৌষমেলা। আর পৌষমেলায় দূষণের অভিযোগে ২০১৬ সালে মামলা হয়েছিল পরিবেশ আদালতে। একতরফাভাবে মেলা বন্ধ করে জাতীয় পরিবেশ আদালত এবং পরিবেশ কর্মীদের উপর দোষ চাপিয়েছিলেন তিনি।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “হাজার হাজার রবীন্দ্রপ্রেমী এই মেলার দিকে এখনও তাকিয়ে থাকেন। ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত শান্তিনিকেতনের মেলা।” বিশ্ববরেণ্য প্রতিষ্ঠানে আবার স্বমহিমায় ঐতিহ্য ফিরুক এবং পৌষমেলা করা হোক শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে পূর্বপল্লীর মেলা প্রাঙ্গণে, এমনই চাইছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৮ই নভেম্বর উপাচার্য পদে মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। পাঁচ বছর ধরে তাঁর সময়কালে বন্ধ হয়েছে পৌষমেলা, বসন্ত উৎসব থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের আচার অনুষ্ঠান। প্রাক্তনী থেকে প্রবীণ আশ্রমিকদের সঙ্গেও নানা বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। একাধিক বিতর্কিত বিষয় আজও চর্চায়। এখন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সঞ্জয় কুমার মল্লিক। বিদ্যুৎ বিদায়ের পর শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা আয়োজন নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, এমনই দাবি পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের। সেই আশায় বুক বেঁধেছেন স্থানীয় হস্তশিল্পী থেকে রবীন্দ্র অনুরাগীরাও। পৌষমেলা বিশ্বভারতীর পূর্বপল্লীর মাঠে ফিরে আসে কিনা, সেদিকেই নজর রয়েছে পড়ুয়া-প্রাক্তনী ও প্রবীণ আশ্রমিকদেরও। নয়া ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিক অবশ্য স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি। তবে পৌষমেলা প্রসঙ্গে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তার পর থেকেই খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছে বোলপুরবাসীদের মনে।