মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিরোধীদের চুপ করাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দেয় বিজেপি। বরাবরই এই অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। সেই অভিযোগ যে মোটেও ভ্রান্ত নয় সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার মিলেছে তার প্রমাণ। বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলিতে সরকার ও শাসকদলের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি-র হানা এখন রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এখন দেশ জুড়েই শোনা যাচ্ছে।
বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে তদন্তের গতি-প্রকৃতির সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলির তদন্তের অতি-তৎপরতার পার্থক্যের মধ্যে রয়েছে আসমান-জমির ফারাক। এ রাজ্যে যেমন দুর্নীতির অভিযোগে বিজেপি নেতাদের কিছুই হয় না। অন্যদিকে, কোনও প্রমাণ ছাড়াই এ রাজ্যে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতার পর্যন্ত করা হচ্ছে। যথাযথ প্রমাণ ছাড়াই তাঁদের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। ‘দুর্নীতিবাজ’, ‘চোর’ বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ এক বিরক্তিকর পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। ভোটের আগে এভাবে বিরোধী নেতৃত্বকে কলঙ্কিত করে চাপ তৈরির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক। এমনকী যেভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে, তা যে অভিসন্ধিমূলক তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের আগে বাংলায় বিজেপি যত দুর্বল হচ্ছে, তাদের সংগঠনের বেহাল দশা যত প্রকট হয়ে উঠছে, ততই নানাভাবে কেন্দ্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহারের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। আর সেই কাজের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছ সিবিআই ও ইডি। এর পিছনে রয়েছে একটি সুচতুর রাজনৈতিক লক্ষ্য। বিজেপি চায় বিরোধী-শাসকের বিপক্ষ হিসাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দাঁড় করিয়ে দিতে। এতে তাদের কেউ সরাসরি দায়ী করতে পারবে না। আদালতের নির্দেশ এবং আইনের পথে সবকিছু চলছে বলে সহজেই দায় এড়িয়ে যেতে পারবে তারা। বাংলার পাশাপাশি বিহার, পাঞ্জাব, দিল্লি, অন্ধ্র-সহ অন্যান্য বিজেপি-বিরোধী রাজ্যেও একই প্রক্রিয়া চলছে।