সফলভাবে জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে ফের নজির গড়ল এসএসকেএম হাসপাতাল। ভেটকি মাছ খেতে গিয়ে ৩ ইঞ্চি লম্বা কাঁটা ১৬ দিন আটকে ছিল জনৈক প্রৌঢ়ার গলায়। কাঁটার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল খাদ্যনালি। এমন মারাত্মকভাবে গলা ফুলেছিল, যে মাথা নাড়াতে পারছিলেন না তিনি। সেই কাঁটাবের করল এসএসএকেএম হাসপাতালের ইএনটি বিভাগ। চিকিৎসকদের দক্ষতায় প্রাণে বাঁচলেন ৫৭ বছরের রোকেয়া বিবি। ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯শে অক্টোবর। মধ্যাহ্নভোজের সময় ভেটকি মাছ খাচ্ছিলেন রোকেয়া বিবি। একটা বড় টুকরো পুরোটাই মুখে নিয়েছিলেন তিনি। চিবিয়ে খাওয়ার সময় ছোট কাঁটাগুলো বের করেন। প্রায় তিন ইঞ্চি লম্বা একটি কাঁটা গলায় আটকে যায়। প্রথম দিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। দিনকয়েক পরে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। ব্যথা এতটাই গুরুতর হতে থাকে যে মাথা, ঘাড় ঘোরাতেই পারছিলেন না। গত শুক্রবার স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে যান। এক্স রে করে কাঁটার অবস্থান বুঝে সঙ্গে সঙ্গে প্রৌঢ়াকে এসএসকেএম হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে পাঠান সেই চিকিৎসক।
এরপর, শনিবার ইএনটির চিকিৎসকরা ভালো করে পরীক্ষা করে দেখেন ভেটকি মাছের কাঁটা খাদ্যনালি ফুটো করে গলার পেশিতে আটকে আছে। পুঁজও জমে ছিল। তাই সংক্রমণও স্বাভাবিক। অ্যন্টিবায়োটিক দিয়ে ব্যথা কমানো হয়। পুঁজ বের করা হয়। মঙ্গলবার ফের লাইভ এক্সরে করে দেখা যায় কাঁটা আটকে আছে। অর্থোপেডিক বিভাগ থেকে সিআর্ম যন্ত্র এনে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার করেন বিভাগীয় প্রধান ডাঃ দেবাশিস দেববর্মন এবং ডাঃ অরুণাভ সেনগুপ্ত। এছাড়াও অস্ত্রোপচার দলে ছিলেন ইএনটি’র সায়ক হাজরা, সৌত্রিক কুমার, সৌরভময় বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং তপোজিৎ দাস। এসএসকেএম হাসপাতালের থেকে জানানো হয়েছে, রোগিণী সুস্থ। দু-একদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে। খাদ্যনালির আশপাশে অনেক স্নায়ু রয়েছে। যেগুলি সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। রয়েছে ক্যারোটিড ধমনি। একটু ভুল হলেই প্রাণ সংশয় হতে পারত। সেখান থেকেই অস্ত্রোপচার সফল করে প্রৌঢ়াকে সুস্থ করে তুললেন চিকিৎসকরা।