জনমুখী সামাজিক প্রকল্পকে বরাবর বিঁধে এসেছেন মোদী। সামাজিক প্রকল্পকে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি, রেউড়ি সংস্কৃতি বলেই দেগে দেন বিজেপি নেতারা। কাঠগড়ায় তোলেন বিরোধীদের। কিন্তু ভোট আসতেই ভোল বদলেছেন খোদ মোদী। এখন তার দল দরাজ হাতে শুরু প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। ৫ রাজ্যের নির্বাচনী প্রচারে মোদী থেকে আরম্ভ করে অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা একগুচ্ছ জনমুখী প্রকল্পের ঘোষণা করছেন।
ছত্তিশগড়ে মোদী ঘোষণা করেছেন, দেশবাসীকে আরও ৫ বছর বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে। মধ্যপ্রদেশে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেছেন, ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ বহন করবে বিজেপি সরকার। কিন্তু এই ঘোষণার বাস্তবায়ন আদৌ কি সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন। প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে গেলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে দেশের ঋণ এবং অর্থ ভাণ্ডারের পরিস্থিতি? ভোটের মুখেই কেন এমন ঘোষণা? ভোট মিটলে কি ঘোষণাগুলো পূরণ হবে? উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
মধ্যপ্রদেশে অমিত শাহ বলেছেন, আম জনতার ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ দেবে বিজেপি সরকার। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৪৫০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও ছত্তিশগড়ে ভোটের প্রচারে বিনামূল্যে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচের ঘোষণা করেছেন। বিরোধীরা বলছেন, ৯ বছরের কম সময়ে মোদী সরকার ১০০ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। আগামীতে দেশকে এই ঋণের মাশুল দিতে হবে। ২০২৩ সালে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোদী সরকারের ঋণের পরিমাণ ১৫৫.৬ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ মোদী সরকার আসার আগে পর্যন্ত জাতীয় ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৮.৬ লক্ষ কোটি টাকা। প্রায় একশো লক্ষ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে মোদী সরকার।
আরটিআই কর্মী তথা তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের অভিযোগ, অত্যাধিক মূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার বেচে দেশের মানুষকে বোকা বানাচ্ছে মোদী সরকার। মধ্যপ্রদেশে অমিত শাহ বলেছেন ৪৫০ টাকায় এলিপিজি সিলিন্ডার দেওয়া হবে। যদি ৪৫০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন এখনই সারা দেশের মানুষকে তা দেওয়া হচ্ছে না। সাকেতের মতে, অমিত শাহ নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন, লোকসান না করেও ৪৫০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা সম্ভব। তাহলে কেন মানুষকে ১,১০০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলছেন তিনি।