আর মাত্র কয়েকদিন পরেই কালীপুজো। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে সারা বাংলা। আসা যাক উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির মন্দিরের পুজোর কথায়। আজও পুজোর সময় সেখানে ভিড় জমান ভক্তরা। বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির অষ্টধাতু নির্মিত কালী মুর্ত্তি বহু প্রাচীন। এক সময় ভবানী পাঠক বেলাকোবার শিকারপুরে এই মুর্ত্তি পুজো করতেন। মায়ের ভয়ঙ্কর রুপ ছিল। দিনের বেলা এই মাকে দেখে ভয় পেতেন অনেকেই। সেখানে মায়ের নাম ছিল জয় মাকালী। দেবীর পায়ে এখনও পরানো আছে লোহার শিকল।
এব্যাপারে রাজবাড়ির কুল পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, “পূর্বপুরুষের থেকে শোনা, মা কালী এক জায়গায় স্থির থাকতেন না। চলাফেরা করে বেড়াতেন। রাজবাড়ির পুরোহিতের কথায়, মা করলা নদীর তীর ধরে গোশালায় দেবী চৌধুরানী মন্দিরে চলে যাচ্ছেন। পরক্ষণে ফিরেও এসেছেন। এ দৃশ্য অনেকেই দেখেছেন। তখন থেকেই রাজবাড়ি মায়ের পায়ে শিকল পরানোর ব্যবস্থা হয়। যাতে তিনি রাজবাড়ি মন্দির ছেড়ে অন্যত্র না যান। আবার মায়ের মন্দিরে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার পথে কেউ শুয়ে থাকলে, অদ্ভুতভাবে চড় চাপড়ও খেয়েছেন, এই কাহিনিও বহুল প্রচলিত। যার জন্য অনেকেই আর রাজবাড়ির বিস্তীর্ণ মন্দির প্রাঙ্গণে এসে ঘুমোন না।” সবমিলিয়ে এই মন্দির আজও বহু ঘটনার সাক্ষী। বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির এই কালীপুজোর বয়স কত, মায়ের মূর্তি কত পুরনো, এসবের কোনও সঠিক উত্তর দিতে কেউ পারেননি। কালীপুজোর সময় দেবীকে নতুন পোশাকে সজ্জিত করা হয়। অমাবস্যার রাতে মাকে মাছের পদ সহযোগে করা হয় ভোগ নিবেদন। দেওয়া হয় পাঁচ রকমের মাছের পদ। সঙ্গে পোলাও, রকমারি মিষ্টান্ন, ফল। ওই রাতেই হয় পাঁঠা বলি। চিরাচরিত প্রথা মেনে এবারও মায়ের পুজোর আয়োজন হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজবাড়ির সূত্র।