আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বাংলার রাজনীতিতে ফুটে উঠল রাম-বাম আঁতাত? জল্পনা তেমনটাই। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে রাজ্যের অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার। এই কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কেন্দ্রে চক্রব্যূহে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরার পরিকল্পনা বিরোধীদের। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে দুবার জিতেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কাজের নিরিখে তিনি ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়। সেখানকার উন্নয়নে গত ১০ বছরে তাঁর কাজের বিচার করবেন জনতা। বিরোধী শিবির যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করাবে, সেটাই স্বাভাবিক। অনেক রকম সমীকরণ কাজ করবে সেক্ষেত্রে। ডায়মন্ড হারবারের বিস্তীর্ণ এলাকা সংখ্যালঘু। আর সেখানে বিরোধীদের তুরুপের তাস তরুণ, জনপ্রিয় নেতা তথা আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। বেশ কয়েকদিন ধরেই সেখানে তাঁর নাম নিয়ে আলোচনা করছে রাজনৈতিক মহলে। আর সেই নাম ভাসিয়ে দেওয়ার কারিগর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনিই এক সভায় চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, ”ডায়মন্ড হারবারে ভাইপোকে হারাব। দরকার হলে অন্য লোক দাঁড় করিয়ে হারাব।”
উল্লেখ্য, এর পর দিনই নওশাদ এক সংবাদমাধ্যমে জানান, দল চাইলে তিনি ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়াবেন। এরপর নওশাদের নাম নিয়ে জল্পনা আরও জোরদার হয়। এখানে আবার কাজ করছে সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের সংযুক্ত মোর্চা জোট। কারণ, একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই জোটের শিবরাত্রির সলতে নওশাদ সিদ্দিকি সংখ্যালঘু ভাঙড়ে তৃণমূলকে হারিয়ে বিধানসভায় পৌঁছেছেন আইএসএফের এই নেতা। লোকসভার লড়াইয়ের তাঁর উপর ভরসা রাখতে বিশেষ দ্বিধা করছেন না জোটের বাকি শরিকরা। তেমনই বক্তব্য শোনা যাচ্ছে বিরোধী নেতাদের গলায়। বিজেপির তরফে শুভেন্দু বাদ দিলেও নওশাদের পক্ষে কথা বলেছেন মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। নওশাদকে ‘ভালো ছেলে’ বলে প্রশংসা করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্য, ”নওশাদ ওখানে দাঁড়ালে দাঁড়ালে, খোকাবাবুর জন্য লড়াই কঠিন হবে।” বিরোধী জোটের এসব বক্তব্য শুনে শাসকদল কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। ”এটা বিজেপি স্পন্সরড একটা চক্রান্ত। সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ শামিল। আসলে পিপীলিকার পক্ষ ওড়ে হারিবার তরে। তবে নওশাদ ওখানে দাঁড়াক। ভালোই তো হবে। হারটা ভালোভাবে দেখা যাবে। বিজেপির গলার কাঁটা তো অভিষেক। তাঁকে হারানোর খেলায় মেতেছে সবাই। ওরা আসলে বিজেপির বি-টিম। আরে ডায়মন্ড হারবারের সবাই জানেন, অভিষেক ওখানে কী কাজ করেছেন। কোভিডের সময় কীভাবে সকলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওঁকে হারানো এত সহজ নয়”, জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।