সামনেই দেশের লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে বঙ্গ বিজেপির অন্তর্কলহ। একদিকে যেমন ঘটছে বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারকে তালাবন্দি করে রাখা থেকে দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশের মত ঘটনা। অন্যদিকে, তখন দলের বসে যাওয়া অভিজ্ঞ কর্মী-নেতাদের পক্ষেই বারবার সওয়াল করছেন দিলীপ ঘোষ। এমনকী, রাজ্য পার্টির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সোমবার পর্যন্ত বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করে উঠতে না পারলেও নিজের ‘অনুগামী’দের নিয়ে ঘটা করে অনুষ্ঠান সেরে ফেললেন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। আর তারপরেই দিলীপের ‘জোশে’ রাশ টানতে তৎপর হল দল!
প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই মুষলপর্ব চলছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। একের পর এক ভোটে পরাজয় থেকে পার্টি অফিসের কোন্দল কার্যত খোলা বাজারে নেমে এসেছে। দলবদলুদের হাতে চলে যায় পদ্ম-পার্টির রাশ। কলকাতার হেড কোয়ার্টার ছেড়ে সল্টলেকে উঠে যায় পার্টি অফিস। অলিখিতভাবে কর্মী-সমর্থকদের জন্য যার দরজা বন্ধ। দলের এই ‘ক্ষয় রোগ’ উপশমে বসে যাওয়া অভিজ্ঞ কর্মী-নেতাদের পক্ষে বারবার সওয়াল করেছেন দিলীপ। পুরনো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এ বছর পার্টির ‘আদি’ সদর দপ্তরে জলযোগ সহকারে বিজয়াও সারেন তিনি। আর ওই অনুষ্ঠানে ওঠা স্লোগান ‘হাউ ইজ দ্য জোশ! দিলীপ ঘোষ, দিলীপ ঘোষ’ বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বকে ‘অস্বস্তি’তে ফেলেছে। যেখানে এই বিজয়ায় সম্মেলনীর জন্য দলের কোনও অনুমতি ছিল না।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে থেকেই রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক কাজ পরিচালনা হচ্ছে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি বাড়ি থেকে। ভাড়া নেওয়া বাড়িতেই তৈরি হয়েছে রাজ্য দফতর। রাজ্য নেতাদের আলাদা আলাদা ঘরও রয়েছে সেখানে। অন্য দিকে, ঠিক হয়েছে পুরনো দফতরে তৈরি হবে রাজ্য দলের ‘কল সেন্টার’। এর পাশাপাশি কলকাতা উত্তর লোকসভা এলাকা নিয়ে যে জেলা, তারও দফতর থাকবে মুরলীধর সেন লেনের ওই বাড়িতে। এখন সেই সংস্কারের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই উপরের দিকের অনেক ঘর ভেঙে কাজ চলছে। তবে অক্ষত রয়েছে একতলার হল ঘরটি। সেখানে এখনও মাঝেমধ্যে সাংবাদিক বৈঠক হয়। কিন্তু এরই মধ্যে সেখানে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে হওয়া ওই বিজয়াকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠছে। যার ফলস্বরূপ রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই হলঘর এবার থেকে তালাবন্ধই থাকবে।