২০০০০ টাকা জরিমানা গুনতে হল মোদী সরকারকে। প্রসঙ্গত, বিগত ১৯৮২ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশনের জন্য আবেদন করেছিলেন বিহারের বাসিন্দা উত্তীমলাল সিং। তখন তাঁর বয়স ছিল ৫৫ বছর। তার পরে দীর্ঘ ৪১ বছর কেটেছে। ৫৫ বছরের উত্তীমলালের বয়স বেড়ে হয়েছে ৯৬। জীবন সায়াহ্নে পৌঁছনো নবতিপর বৃদ্ধের আবেদন নিয়ে টালবাহানা শেষ হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশন পেতে দিল্লী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। গত ২রা নভেম্বর বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যিয়ম প্রসাদ নবতিপর স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশন নিয়ে টালবাহানা করায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে তুলোধনা করার পাশাপাশি ২০০০০ টাকা জরিমানা করেছেন। সেই সঙ্গে আগামী তিন মাসের মধ্যে ১৯৮০ সাল থেকে বকেয়া পেনশন সুদ-সহ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “দেশকে স্বাধীন করার জন্য যিনি জীবনকে বাজি রেখে লড়াই করেছেন তার প্রতি ভারত সরকারের এমন অসংবেদনশীল আচরণ যন্ত্রণাদায়ক। একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীকে তাঁর প্রাপ্যের জন্য ৪০ বছর ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে, এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না। এমন অসংবেদনশীল আচরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে জরিমানা গুণতে হবে। ২০০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর ওই জরিমানা আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে আবেদনকারী উত্তমীলাল সিংহের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।” আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়ার প্রমাণ-সহ বিভিন্ন নথি জমা দিয়ে বিহার সরকারের কাছে ১৯৮২ সালে স্বতন্ত্র সৈনিক সম্মান পেনশনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন উত্তমীলাল সিং। বিহার সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৮৫ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশন দেওয়ার জন্য উত্তমীলাল সিংয়ের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু ওই নথি হারিয়ে যায় মন্ত্রকের কার্যালয় থেকে। বিহার সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার চিঠিও পাঠানো হয়। সর্বশেষ চিঠি পাঠানো হয়েছিল গত বছরের জুলাই মাসে। তার পরেও উত্তমীলাল সিংহের পেনশন বরাদ্দ করেনি অমিত শাহের মন্ত্রক। এবার তা বরাদ্দ করার নির্দেশ দিল আদালত।