বিশ্বকাপের প্রসঙ্গে তুলে এবার বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে অভিনব ভঙ্গিতে কটাক্ষ করলেন রাজ্যে মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। কীভাবে মোদী সরকার কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে, সোমবার দুপুরে তা নিয়েই সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূল ভবনে। ভরা সাংবাদিক বৈঠকে অ্যাজেন্ডার ওপর গুরুগম্ভীর আলোকপাত করছিলেন দলের মন্ত্রী শশী পাঁজা। এরপর হঠাৎই মাইক টেনে নেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। বললেন, “রাজ্যপালের একটা কথা আমি সহমত পোষণ করি, রাজ্যপালও বুঝতে পারছেন ইন্ডিয়া জিতবে!” যা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকেও রীতিমতো হাসাহাসি শুরু হয়ে যায়। হেসে ফেলেন শশীদেবীও। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের মোদী সরকারকে গদিচ্যুত বিরোধীরা একত্রিতভাবে গড়েছে ইন্ডিয়া জোট। এরপরই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘ভারত’ করা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। আগামী দিনে ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘ভারত’ নামই যে সরকারের পছন্দ, তার প্রমাণ মিলেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তেও। রেলের ‘ভারত’ নামের প্রস্তাবের উপরও সম্প্রতি সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
প্রসঙ্গত, রবিবার ইডেনে ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের টিকিটের কালোবাজারির জেরে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য রাজভবনের লনে ওয়াইড স্ক্রিনে ম্যাচ দেখানোর আয়োজন করছিলেন রাজ্যপাল বোস। ভারতের জয়ের পর উচ্ছ্বসিত রাজ্যপাল বলেন, “ইন্ডিয়ার জন্য গর্বের মুহূর্ত। ক্রিকেটের জন্যও। ইন্ডিয়া আবারও তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল। নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারতের ধারণা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ইন্ডিয়া যে আত্মনির্ভর, বিশ্বের বুকে আবারও সেটা প্রমাণ করলেন ইন্ডিয়ার ক্রিকেটাররা। সারা বিশ্ব আজ উপলব্ধি করে ইন্ডিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব।”
সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গেই রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, “ইডেনে বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করলেন, তাতে প্রধানমন্ত্রীর কী অবদান, সেটা বুঝতে পারছি না! বুঝতে পারলে সুবিধা হত। রাজ্যপালের অনেক কথাই তো মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়! উনি যদি একটু বুঝিয়ে বলেন, তাহলে ভাল হয়!” এরপরই রাজ্যপালের ‘ইন্ডিয়া জিতবে’ শব্দবন্ধটিকে সমর্থন জানান পার্থ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যপালের মুখে বারংবার শোনা যাওয়া ওই ইন্ডিয়া শব্দ নিয়েই এদিন তাঁকে পাল্টা একহাত নিতে চেয়েছেন পার্থ। স্পষ্ট বোঝাতে চেয়েছেন, এবারের লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া জোটই যে জিতবে, তা রাজ্যপালেরও অজানা নয়।