মাসে মাথা পিছু পাঁচ কেজি করে চাল অথবা গম দেওয়ার কর্মসূচি আরও পাঁচ বছর চালু থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছত্তীসগড়ে নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর এই ঘোষণা করে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় স্পষ্ট দেশের মানুষ ভাল নেই। করোনার পর দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী যতই দাবি করুন না কেন, আসলে আর্থিক অবস্থা বেহাল।
এদিকে, খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করছেন, প্রধানমন্ত্রী যে সুবিধা চালু রাখার কথা ঘোষণা করেছেন, দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষ তা থেকে বঞ্চিত হবেন। জনগণনা না হওয়াতেই এই বিপত্তি বলে খাদ্য সুরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি। আগের ইউপিএ সরকার ২০১৩ সালে দেশে খাদ্য সুরক্ষা আইন চালু করে মাসে মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে খাদ্য শস্য দেওয়ার প্রকল্প চালু করে। ওই প্রকল্পে তিন টাকা কেজি দরে চাল, দু টাকা কেজিতে গম এবং এক টাকা কিলো দরে ছোলা দেওয়া শুরু হয়।
২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার গ্রামে ৭৫ শতাংশ, শহরে ৫০ শতাংশ মানুষকে নামমাত্র দামে চাল-গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই হিসাবে আশি কোটি মানুষ এই সুবিধার আওতায় আসেন। ২০১১ সালের জনগণনার হিসাব ধরে প্রাপকের সংখ্যা আশি কোটি নির্ধারিত হয়। তখন জনসংখ্যা ছিল ১২০ কোটি। জনসংখ্যার বাৎসরিক বৃদ্ধির হার ধরে হিসাব কষে দেখা যাচ্ছে, ১৪০ কোটি ছাপিয়ে গিয়েছে দেশের জনসংখ্যা। বাড়তি কুড়ি কোটির অর্ধেক অর্থাৎ দশ কোটি মানুষের গরিবের রেশন পাওয়ার কথা। কিন্তু জনগণনা না হওয়ায় তারা সস্তার রেশন পাবেন না, বলছেন আইআইটি, দিল্লির অধ্যাপক ঋতিকা খেরা। তিনি খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে কাজ করেন দীর্ঘদিন যাবত। তাঁর বক্তব্য, সরকারের এই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।