ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করার পর সেই সম্মান প্রাপ্তির ফলকে প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না থাকায় তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁর মাঝেই এবার কর্মক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক। নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই আধিকারিক রবীন্দ্র ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত। শুক্রবার সকালেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশ, প্রশাসন, বোলপুর ও শান্তিনিকেতনবাসীর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন তিনি। আর তারপরেই শান্তিনিকেতনের পড়ুয়া এবং বাসিন্দারা রবীন্দ্র ভবনের সামনে ছুটে যান, তাঁর পাশে দাঁড়াতে।
এদিন নীলাঞ্জনবাবু সোশ্যাল মিডিয়া লেখেন, বৃহস্পতিবার উনি কলকাতায় গিয়েছিলেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন, রাত্রে বাড়ি ফিরেছেন। এরই মধ্যে বিশ্বভারতীর উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নির্দেশ অনুযায়ী দুজন অধ্যাপক তাঁকে ফোন করে জানান, শুক্রবার অফিসে না যেতে। নীলাঞ্জনবাবু লিখেছেন, ‘তাঁরা অনুরোধ করেন, আমি যেন শুক্রবার কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ না করি। সম্পূর্ণ দূরে অন্য এক বিভাগে গিয়ে আজকের দিনটা বসে থাকি। আমি এই রহস্যময়, অনৈতিক, কুরুচিকর, অপেশাদার এবং সন্দেহজনক প্রস্তাবের কোনও কারণ অথবা যুক্তি খুঁজে পাইনি। ফলে তাঁদের জানাই যে, এই মর্মে আমাকে যথাযথ মাধ্যমে কোনও লিখিত নির্দেশ না দিলে আমি আমার নিজের কাজের জায়গায় শত বাধা বা বিপদ থাকলেও যাব।’
এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘তা সত্ত্বেও আমি আজ সকাল সাড়ে নটায় আমার কর্মক্ষেত্রে রোজকার মতোই ঢুকব। ওখানে আমি ওই উচ্চপদস্থ কর্তা অথবা তাঁর নিযুক্ত কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিবর্গের হাতে আমার প্রাণহানির আশঙ্কা করছি।’ একইসঙ্গে নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং বোলপুরবাসী ও অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এই ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হতেই হইচই পড়ে যায়। উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী স্থানের মধ্যে অন্যতম রবীন্দ্রভবন। মিউজিয়াম-সহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাসভবনগুলি রয়েছে সেখানে। ওই ভবনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত রয়েছেন নীলাঞ্জনবাবু। সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টের পরে তিনি উপাচার্যের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে একটি কবিতাও পোস্ট করেন।