গত ২৩ অগস্ট ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে সফল ভাবে অবতরণ করেছিল চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। সেই অভিযান নিয়েই একটি মডিউল ছাপিয়েছিল এনসিইআরটি। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ওই মডিউলের সমালোচনায় সরব ভারতের অন্যতম বড় বিজ্ঞান সংগঠন— অল ইন্ডিয়া পিপলস সায়েন্স নেটওয়ার্ক। এই সংগঠনের ছাতার তলায় আরও ৪০টি বিজ্ঞান সংগঠন রয়েছে দেশের। সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, চন্দ্রযান নিয়ে যে মডিউল প্রকাশ করা হয়েছে, তা এসিইআরটি-র মানের নয়। অভিযোগ, এই মডিউলে নাৎজি বিজ্ঞানীর উল্লেখ রয়েছে। এই আবহে বিজ্ঞান সংগঠনের অভিযোগ, স্কুল পড়ুয়ারা ভুল শিখবে এই মডিউল থেকে। এই আবহে সেই মডিউলগুলি ফেরত নেওয়ার দাবি জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া পিপলস সায়েন্স নেটওয়ার্ক।
এদিকে এনসিইআরটির মডিউল নিয়ে আরও অভিযোগ, চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে বলতে গিয়ে বিজ্ঞান ও পুরাণকে মিশিয়ে ফেলা হয়েছে এতে। শুধু তাই নয়, এই অভিযানের সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসরো প্রধান এস সোমনাথের উপস্থিতিতেই এই মডিউলটি প্রকাশ করেছিল এনসিইআরটি। সেই লেখায় পুরাণের ভূমিকা নিয়ে লেখা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা সেই মডিউলে দেশের নাম ‘ভারত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে এই মডিউল নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে প্রাথমিক ভাবে নিজেদের ওয়েবসাইট থেকে তা সরিয়ে দেয় এনসিইআরটি। পরে কেন্দ্রীয় সরকার সেই মডিউলের পক্ষেই কথা বলে। এরপর ফের ওয়েবসাইটে ফিরে আসে মডিউলটি।
এনসিইআরটি-র এই মডিউলের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পৌরাণিক কাহিনী থেকেই উদ্ভাবন এবং নতুন জ্ঞানের দিকে অগ্রসর হতে উদ্বুদ্ধ হই। অসংখ্য গবেষণাতে দেখা গিয়েছে, পৌরাণিক কাহিনী ভারত সহ যে কোনও দেশের সাংস্কৃতিক কাঠামোতে একটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার সাথে সংস্কৃতির মেলবন্ধন জাতির ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি বাড়ায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। এরই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতাও বৃদ্ধি করে।’ শুধু তাই নয়। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে মোদীর গুণগান করে বলা হয়েছে, ‘ভারতের মহাকাশ গবেষণার প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দায়বদ্ধতার ওপর জোর দেওয়া অপরিহার্য। আমাদের বিজ্ঞানীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অটল সমর্থন ও উৎসাহের স্বীকৃতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে পারে।’